রবিবার - মে ১৯ - ২০২৪

অনুভবে মুক্তিযুদ্ধ

অনেকদিন লিখিনা। এখন অফিসে কাজের এতোই চাপ যে বাসায় ফির মনে হয় শুয়েই কাটাই ফলে অলসতায় ধরে আর তাই সময় চলে যায়। ভেবেছিলাম কানাডার অভিজ্ঞতার কথাই লিখবো কিন্তু জন্মভুমিযে সব সময় স্মরণে আসে। তাই একটি দুটি লেখা চলতেই থাকে।

- Advertisement -

নিতান্তই স্মৃতির উপরে ভর করেই সব লেখা। এবার ভাবছি মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু লিখি। এই লেখার মাধ্যমে সেটাই শুরু করছি। এটা আমার চোখে বা অনুভবে দেখা  মুক্তিযুদ্ধ এবং আমাদের এলাকাতেই।। ১৯৭১ সালে আমরা মুক্তি যুদ্ধ করেছি সত্য তবে এ যুদ্ধ মনসতাত্তীকভাবে শুরু হয়ে ছিলো ১৯৪৮ সালে এ উপ-মহাদেশ ভাগ হওয়ার পর যখন বলা হয়েছিলো “Urdu and urdu will be only language of Pakistan” ৫২ এবং ৬৯ হাত ধরে পূর্ণতা পায় আমাদের চেতনা তারপর ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ।

আমরা সবাই কম বেশী সেটা জানি তাই আমি সে বিষয়ে যাবো না,  আমার এ লেখা আমি শুরু করতে চাই ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুথ্থান থেকে। আসুন দেখি কি লিখি—

১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান এর পর আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্ত হয়ে এলেন বঙ্গবন্ধু এবং অন্যান্য নেতারা। ৭০ এর নির্বাচন এর জন্য বঙ্গবন্ধু গন সংযোগ শুরু করে দিলেন। আমার মনে পড়ে আব্বার সাথে ফেব্রুয়ারী ১৯৭০ এর  কোন একদিনে যশোর গিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষন দেখে ও শুনে এসেছিলাম।

১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর প্রলংয়ন্কারী জলোচ্ছাসে বরিশাল ভোলা পটুয়াখালী মৃতপুরীতে পরিণত হলো। বর্তমান সময়ের সুনামী আর এ জলোচ্ছাস আমার কাছে এখন একই রকম মনে হয়। ঐ এলাকার গ্রাম ও অনেক জনপদ নিশ্চিন্ন হয়ে গিয়েছিলো সে সময় ।  এর কিছুদিন পরই হয় ৭ ই ডিসেম্বর  পাকিস্তানের নির্বাচন । বঙ্গবন্ধুর দল সংখ্যাগরিষ্টতা পায়।

১৯৭১ সালের  শুরু থেকেই আমাদের অপেক্ষা কবে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী হবেন। সে সময় তদানীন্তন পূর্ব-পাকিস্তান এর কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা আর ভারতের পশ্চিম বাংলার সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় একটি সমস্যা বিরাজ করছিলো। নক্সাল পন্থীদের ব্যাপক কার্যকলাপ চলছিলো দুই পারেই। ও পারে চারু মজুমদার ও তার লোকজনদের আক্রমনে কত ধনীলোক যে মারা গেছেন তার হিসাব নেই। এদের কথা-শ্রেণী শত্রু খতম করো। টাকা পয়সা ওয়ালারাই এদের টার্গেট।

যশোর মনিরামপুর কেশবপুর ফুলতলা এলাকায় ব্যাপক ত্রাশ এসব নক্সালপন্থীদের। এদের অনেকেই লাল পান্জাবী পরে ঘুরে বেড়াতেন আর এদের আক্রোশ ধনীদের উপর। লাল কালিতে চিঠি লেখা, খামের মধ্যে প্রতিকী কাফনের কাপড়ও তারা পাঠিয়ে দিতেন। “ একটি বাংলাদেশ” যেখানে আমাদের কাম্য ছিলো সেখানে আমাদের চাওয়া পাওয়ার মধ্যে এদের অপতৎপরতাও বিরাজ করতো। যশোর, খুলনা এলাকায় যারা এমন অপতৎপরতা চালাতেন তাদের পরবর্তী জেনারেশন আজ ধর্ন্যাঢ্য  সেখানে। শ্রেণী শত্রু Concept এখন আর নেই। চারু মজুমদার মারা যাওয়ার সাথে সাথে তা উবে গেছে অনেক আগেই।

ইনুইভিক, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent