রবিবার - মে ১৯ - ২০২৪

স্বপ্নপর্বের তিন কাহন : তিন

আপনার চাদরের নীচে নড়াচড়া করছে ওটা কি ?
মনে হ’ল, লোকটা অন্ধকারেও আমার নাড়িভুরি দেখতে পাচ্ছে। এখন কোন ধরনের রাখঢাক করা ঠিক হবে না।
বললাম, মুরগী।
অন্ধকারের ভিতর সাদা দাঁত দেখে মনে হল, লোকটা হাসলো।
মুরগী ? মুরগী মানে ? আপনি এতো রাতে মুরগী নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন ?
যাচ্ছি নির্বাচন কমিশন অফিসে। মুরগী প্রতীক বরাদ্ধ নিতে। অফিসটাতো কাছাকাছি কোথাও ?
লোকটা প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বরং আমার কথায় বেকুবের মতো হাসলো আবার।
পাশ থেকে অই চারজনের একজন বলল, স্যার, মুরগীটা রেখে দেবা ?
এই, মুরগী রাখবে মানে ? আমাকে চেনো ? আমি একজন রিটায়ার্ড সচিব, আমার সঙ্গে ফাজলামো হচ্ছে ?
না স্যার। আপনার মুরগী আপনার কাছেই রাখুন। তবে অই যে অফিসটার কথা বললেন, ওটা এখন আর ওখানে নেই। কোথায় গেছে কেউ বলতে পারে না।
আপনারা জানেন না ? তাহলে চাকুরী করছেন কেন ?
সবার পক্ষে তো আর সব কিছু জানা সম্ভব নয় স্যার। এই যেমন ধরুন, আপনিও জানেন না স্যার অই অফিসটা কোথায় গেছে! কিংবা আপনার বাড়িটি এখান থেকে ঠিক কতো কিলোমিটার দূরে।
তা ঠিক। মনে মনে ভাবলাম, এই অসময়ে এদের সঙ্গে তর্কে জড়ানো মোটেই সংগত নয়। বললাম, আমি এখন যেতে পারি।
জ্বি মুরুব্বি, আপনি এখন যেতে পারেন। কালো চশমাওয়ালার পাশে দাঁড়ানো লোকটা বলে উঠলো। একটু আগে এই লোকটাই তো মুরগীটা রেখে দেবার কথা বলছিল।

- Advertisement -

আবার দৌড়। রাস্তাঘাট শূন্য বলা চলে। মনুষ্যপ্রানীর টিকিটিও দেখা যাচ্ছে না কোথাও। একসময় মনে হ’ল, আমি রাস্তাঘাট সব হারিয়ে ফেলেছি। ক্রমশ অচেনা হয়ে উঠছে সবকিছু। তবে অন্ধকার আর নেই, এখন আমার চারপাশ ঘিরে আছে ঘণ কুয়াশা। আর সহসাই সেই জমাটবাধা কুয়াশায়, যেন স্বপ্নের ভিতরে আর এক স্বপ্নের মতো ভেসে উঠল বাড়িটি। আমি আনন্দে প্রায় চিৎকার করে উঠলাম, নির্বাচন কমিশন!
তবে আমি অবাক হলাম। বাড়িটিকে মনে হল একটি ভুতুড়ে বাড়ি। কোথাও কোন লোকজন নেই। পুরো সাইনবোর্ড ধুলোর আস্তরনে ঢাকা। দু’একটি বর্ণ উঁকি দিচ্ছে মাত্র। পরিত্যক্ত পোড়োবাড়ি যেন। ফিল্মে ভুতের বাড়ি যেমন হয়। চারদিক মাকরশার জালে ঘেরা। যেন দীর্ঘকাল সংস্কারের অভাবে এখন একটি কংকালের মতো। বাড়ির কাঠামো আছে ঠিকই, তবে ভিতরে বাড়িটি নেই।
বাবা আপনি ভয় পেলেন না ? ঋতু বলল, আমার তো শুনেই হাত পা হীম হয়ে আসছে!
বৌমা, তোমাকে কতবার বলবো, কথার মধ্যে বা’হাত দিও না।

মাকরশার জাল সরিয়ে ভিতরে ঢুকতেই নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার শা’দত আলী খানের অফিস।

তিনি অফিসে নেই। এই মুহূর্তে ‘বাংলা ভাষা উন্নয়নে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা’ শীর্ষক টক শো’তে ব্যস্ত আছেন । তবে তাঁর চেয়ারে একখানা পাথরের মূর্তি বসিয়ে রেখে গেছেন। আমি বসলাম মূর্তির বিপরীতে। আমাদের মাঝখানে ধাতব টেবিল, শূন্য। ধুলোয় ধুলোময়।
হোয়াট ড্যু ইউ ওয়ান্ট? কথা বলে উঠলেন পাথুরে শা’দত আলী খান।
প্রতীক বরাদ্দের জন্যে এসেছি।
হোয়াট ড্যু ইউ মিন ? দিস ইজ নট অ্যন ইলেকশন টাইম। ইউ হ্যাভ টু ওয়েট এনাদার টু টু থ্রী ইয়ারর্স।
তা হোক। আমি এখন থেকেই প্রচারাভিযান চালাতে চাই। অসুবিধা আছে ?
নো। ফ্রম মাই সাইড, নো প্রবেøম এ্যাট অল। হোয়াট সিম্বল ড্যু ইউ ওয়ান্ট ? এন্ড ফ্রম হুইজ পার্টি ?
মুরগী। মুরগী মার্কা নিয়ে দাঁড়াতে চাই। কোনো দল থেকে না। আমি জানি, বড় দল আমাকে নমিনেশন দেবে না।
এই সময় আমি চাদরের ভিতর থেকে বের করে মুরগীটিকে ধাতব টেবিলের উপর বসতে দিলাম। বেচারা এতদূর জার্নি করে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
টেল মি ওয়ান থিং, হোয়াই ইউ ওয়ান্ট টু চুজ চিকেন এ্যাজ ইওর সিম্বল ?
কারণ একবার এম.পি হ’তে পারলে অই মুরগী প্রতিদিন একটা করে সোনার ডিম পারবে। বছরে ৩৬৫ টি সোনার ডিম। পাঁচ বছরে ৩৬৫ ী ৫ = ১৮২৫টি। ভাবা যায়! তার উপর কাবিখা, টেন্ডার বানিজ্য, ভর্তি বানিজ্য, নিয়োগ ও বদলী বানিজ্য, তদবীর বানিজ্য এসব উপরিতো আছেই।
আই সি।
মুরগী প্রতীক বরাদ্দে আপনার কোন সমস্যা আছে ?
নো।
যদি না থাকে তাহলে আমাকে প্রতীক বরাদ্দ করুন, আমি চলে যাই।
ওকে।
ঠিক এসময় মুরগীটি ধাতব টেবিলের উপর হাগু করে দেয়, যা শা’দত আলী খানকে সহসা উত্তেজিত করে তোলে।
নাউ ক্লিন দ্য টেবল এন্ড গেট লষ্ট।
আমি পকেট থেকে রুমাল বের করে মুরগীর হাগু পরিষ্কার করে পকেটে রাখলাম।

মুরগীর হাগু পকেটে রাখার কথা শুনে ঋতু বলল, ইয়াক্!
ইয়াক্ ইয়াক্ করছো কেন ? বিদেশে দেখেছি, মানুষ কফের দলা, কুকুরের হাগু পকেটে নিয়ে ঘোরে, যেখানে সেখানে ফেলে না।

শা’দত আলী খানের রাগত চোখ তখনো আমার দিকে।
বললাম, ভাষার মাসে আপনি আমার সঙ্গে ইংরেজি না বললেও পারতেন।

আপনার চাদরের নীচে নড়াচড়া করছে ওটা কি ?
মনে হ’ল, লোকটা অন্ধকারেও আমার নাড়িভুরি দেখতে পাচ্ছে। এখন কোন ধরনের রাখঢাক করা ঠিক হবে না।
বললাম, মুরগী।
অন্ধকারের ভিতর সাদা দাঁত দেখে মনে হল, লোকটা হাসলো।
মুরগী ? মুরগী মানে ? আপনি এতো রাতে মুরগী নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন ?
যাচ্ছি নির্বাচন কমিশন অফিসে। মুরগী প্রতীক বরাদ্ধ নিতে। অফিসটাতো কাছাকাছি কোথাও ?
লোকটা প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বরং আমার কথায় বেকুবের মতো হাসলো আবার।
পাশ থেকে অই চারজনের একজন বলল, স্যার, মুরগীটা রেখে দেবা ?
এই, মুরগী রাখবে মানে ? আমাকে চেনো ? আমি একজন রিটায়ার্ড সচিব, আমার সঙ্গে ফাজলামো হচ্ছে ?
না স্যার। আপনার মুরগী আপনার কাছেই রাখুন। তবে অই যে অফিসটার কথা বললেন, ওটা এখন আর ওখানে নেই। কোথায় গেছে কেউ বলতে পারে না।
আপনারা জানেন না ? তাহলে চাকুরী করছেন কেন ?
সবার পক্ষে তো আর সব কিছু জানা সম্ভব নয় স্যার। এই যেমন ধরুন, আপনিও জানেন না স্যার অই অফিসটা কোথায় গেছে! কিংবা আপনার বাড়িটি এখান থেকে ঠিক কতো কিলোমিটার দূরে।
তা ঠিক। মনে মনে ভাবলাম, এই অসময়ে এদের সঙ্গে তর্কে জড়ানো মোটেই সংগত নয়। বললাম, আমি এখন যেতে পারি।
জ্বি মুরুব্বি, আপনি এখন যেতে পারেন। কালো চশমাওয়ালার পাশে দাঁড়ানো লোকটা বলে উঠলো। একটু আগে এই লোকটাই তো মুরগীটা রেখে দেবার কথা বলছিল।

আবার দৌড়। রাস্তাঘাট শূন্য বলা চলে। মনুষ্যপ্রানীর টিকিটিও দেখা যাচ্ছে না কোথাও। একসময় মনে হ’ল, আমি রাস্তাঘাট সব হারিয়ে ফেলেছি। ক্রমশ অচেনা হয়ে উঠছে সবকিছু। তবে অন্ধকার আর নেই, এখন আমার চারপাশ ঘিরে আছে ঘণ কুয়াশা। আর সহসাই সেই জমাটবাধা কুয়াশায়, যেন স্বপ্নের ভিতরে আর এক স্বপ্নের মতো ভেসে উঠল বাড়িটি। আমি আনন্দে প্রায় চিৎকার করে উঠলাম, নির্বাচন কমিশন!
তবে আমি অবাক হলাম। বাড়িটিকে মনে হল একটি ভুতুড়ে বাড়ি। কোথাও কোন লোকজন নেই। পুরো সাইনবোর্ড ধুলোর আস্তরনে ঢাকা। দু’একটি বর্ণ উঁকি দিচ্ছে মাত্র। পরিত্যক্ত পোড়োবাড়ি যেন। ফিল্মে ভুতের বাড়ি যেমন হয়। চারদিক মাকরশার জালে ঘেরা। যেন দীর্ঘকাল সংস্কারের অভাবে এখন একটি কংকালের মতো। বাড়ির কাঠামো আছে ঠিকই, তবে ভিতরে বাড়িটি নেই।
বাবা আপনি ভয় পেলেন না ? ঋতু বলল, আমার তো শুনেই হাত পা হীম হয়ে আসছে!
বৌমা, তোমাকে কতবার বলবো, কথার মধ্যে বা’হাত দিও না।

মাকরশার জাল সরিয়ে ভিতরে ঢুকতেই নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার শা’দত আলী খানের অফিস।

তিনি অফিসে নেই। এই মুহূর্তে ‘বাংলা ভাষা উন্নয়নে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা’ শীর্ষক টক শো’তে ব্যস্ত আছেন । তবে তাঁর চেয়ারে একখানা পাথরের মূর্তি বসিয়ে রেখে গেছেন। আমি বসলাম মূর্তির বিপরীতে। আমাদের মাঝখানে ধাতব টেবিল, শূন্য। ধুলোয় ধুলোময়।
হোয়াট ড্যু ইউ ওয়ান্ট? কথা বলে উঠলেন পাথুরে শা’দত আলী খান।
প্রতীক বরাদ্দের জন্যে এসেছি।
হোয়াট ড্যু ইউ মিন ? দিস ইজ নট অ্যন ইলেকশন টাইম। ইউ হ্যাভ টু ওয়েট এনাদার টু টু থ্রী ইয়ারর্স।
তা হোক। আমি এখন থেকেই প্রচারাভিযান চালাতে চাই। অসুবিধা আছে ?
নো। ফ্রম মাই সাইড, নো প্রবেøম এ্যাট অল। হোয়াট সিম্বল ড্যু ইউ ওয়ান্ট ? এন্ড ফ্রম হুইজ পার্টি ?
মুরগী। মুরগী মার্কা নিয়ে দাঁড়াতে চাই। কোনো দল থেকে না। আমি জানি, বড় দল আমাকে নমিনেশন দেবে না।
এই সময় আমি চাদরের ভিতর থেকে বের করে মুরগীটিকে ধাতব টেবিলের উপর বসতে দিলাম। বেচারা এতদূর জার্নি করে বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
টেল মি ওয়ান থিং, হোয়াই ইউ ওয়ান্ট টু চুজ চিকেন এ্যাজ ইওর সিম্বল ?
কারণ একবার এম.পি হ’তে পারলে অই মুরগী প্রতিদিন একটা করে সোনার ডিম পারবে। বছরে ৩৬৫ টি সোনার ডিম। পাঁচ বছরে ৩৬৫ ী ৫ = ১৮২৫টি। ভাবা যায়! তার উপর কাবিখা, টেন্ডার বানিজ্য, ভর্তি বানিজ্য, নিয়োগ ও বদলী বানিজ্য, তদবীর বানিজ্য এসব উপরিতো আছেই।
আই সি।
মুরগী প্রতীক বরাদ্দে আপনার কোন সমস্যা আছে ?
নো।
যদি না থাকে তাহলে আমাকে প্রতীক বরাদ্দ করুন, আমি চলে যাই।
ওকে।
ঠিক এসময় মুরগীটি ধাতব টেবিলের উপর হাগু করে দেয়, যা শা’দত আলী খানকে সহসা উত্তেজিত করে তোলে।
নাউ ক্লিন দ্য টেবল এন্ড গেট লষ্ট।
আমি পকেট থেকে রুমাল বের করে মুরগীর হাগু পরিষ্কার করে পকেটে রাখলাম।

মুরগীর হাগু পকেটে রাখার কথা শুনে ঋতু বলল, ইয়াক্!
ইয়াক্ ইয়াক্ করছো কেন ? বিদেশে দেখেছি, মানুষ কফের দলা, কুকুরের হাগু পকেটে নিয়ে ঘোরে, যেখানে সেখানে ফেলে না।

শা’দত আলী খানের রাগত চোখ তখনো আমার দিকে।
বললাম, ভাষার মাসে আপনি আমার সঙ্গে ইংরেজি না বললেও পারতেন।

ভাষার মাস, সো হোয়াট ! আই হ্যাভ টু সে বাংলা উইথ ইউ ? হোয়াট ক্যান ইউ ড্যু ইফ আই স্পিক ইংলিশ ? মাই ফ্রেন্ড বিগ্রেডিয়ার হরিদাশ পাল, নাউ রিটায়াডর্, ওয়েন্ট টু চিটাগং শহীদ মিনার উইথ হিজ স্যুজ অন। নাথিং হ্যাপেন্ড টু হিম আফটারওয়ার্ড। আই এম ডান উইথ ইউ, নাউ গেট লষ্ট।

ভাষার মাস, সো হোয়াট ! আই হ্যাভ টু সে বাংলা উইথ ইউ ? হোয়াট ক্যান ইউ ড্যু ইফ আই স্পিক ইংলিশ ? মাই ফ্রেন্ড বিগ্রেডিয়ার হরিদাশ পাল, নাউ রিটায়াডর্, ওয়েন্ট টু চিটাগং শহীদ মিনার উইথ হিজ স্যুজ অন। নাথিং হ্যাপেন্ড টু হিম আফটারওয়ার্ড। আই এম ডান উইথ ইউ, নাউ গেট লষ্ট।

ইস্টইয়র্ক, অন্টারিও, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent