বিশ্ব রাজনীতি এখন খুব নাজুক অবস্থায় আছে।পরিস্থিতি কখন কোন দিকে মোড় নিচ্ছে আগে থেকেই অনুমান করা কঠিন। কে শত্রু আর কে মিত্র ; সবই এখন আপেক্ষিক।
প্রায় পাঁচ বছর পর আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনী ব্লিংকেন চীন সফর করলেন। সেখানে তাকে বলে আসতে হলো, আমেরিকা তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে না।
তার মানে কি? চির শত্রু চিনকেও আমেরিকাকে অভয় দিতে হচ্ছে। চিনকেও খুব একটা ক্ষেপিয়া দিতে চাচ্ছে না আমেরিকা।চির বৈরীকে সে চির শত্রু বানাতে চাচ্ছে না।
মোদি ভারত সফরে গিয়েছেন।এটি খুব হাই প্রফাইল ভিজিটি। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার আশা করছে ভারত তাদের পক্ষ হয়ে কিছু বলবে।বুঝা যাচ্ছে এটি নিয়ে তারা ভিতরে ভিতরে দেন দরবারও করেছে। এর মধ্যে ভারতকেও তারা চাপে রেখেছে। সেই চাপটি হচ্ছে, দ্যাখো, আমি তোমার সব স্বার্থ সুরক্ষিত করেছি। সুতরাং, তুমি যদি আমার দিকে না তাকাও তবে আমি তোমার চির শত্রু চিনের দিকে আরো ঝঁকে যাবো।
তবে আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় মনে হয়েছে তিনি এই ব্যাপারে কোন দেন দরবার করেননি। তিনি আশা করছেন, ভারতীয় সরকার নিজের বিচার বুদ্ধি খাটিয়ে এই বিষয়ে কথা বলবেন কি বলবেন না ; তা একান্তই ভারতের ব্যাপার।
এর অর্থ দাঁড়ায়, ভারতকে এই বিষয়ে বলে দিতে হবে কেন? ভারত নিজ স্বার্থেই এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলা উচিত।
তার মানে বিষয়ট কি দাড়াচ্ছে, তুমি আমার পক্ষে থাকলে আমিও তোমার পক্ষে আছি। এক ধরনের প্রচ্ছন্ন হুমকি।
সে যাই হোক, মোদির এই সফরে মোদি নিজেই অনেকটা চাপে থাকবেন। তাই বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে তিনি কিছু বলার সুযোগ পাবেন কিনা সন্দেহ। এমনও পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে যেখানে মোদি বাংলাদেশের প্রসংগ উঠাবার পরিবেশ নেই বলে ভাবতে পারেন।
সেই ক্ষেত্রে মোদি বাংলাদেশের প্রসংগ আর উঠাবেন না।
সেটির প্রভাব অনেক। আমেরিকা বাংলাদেশের রেজিম চেঞ্জ করে তাদের মন মতো সরকার বসিয়ে দেওয়ার প্ল্যান বাস্তবায়ন করবে ।
ভারত সেখানে নিরব দর্শক হিসাবে দাঁড়িয়ে থাকবে।
ভারতকে এমন হয়ত আশ্বাস দেওয়া হতে পারে, এই রেজিম চেঞ্জে ভারতের কোন ক্ষতি হবে না বরং চিনকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হবে।
ভারতের সব স্বার্থ যদি অক্ষুণ্ণ থাকে তবে অসুবিধা কি?
সেই জন্যই বলছিলাম, বিশ্ব রাজনীতি এখন খুব ক্রিটিক্যাল।
সবাই যার যার স্বার্থ রক্ষিত হলেই খুশি।
সেই হিসাবে অনেক সময় ইকোয়েশনগুলি ঠিক থাকে না । এই ইকোয়েশনগুলি সময় সময় পরিবর্তনশীল।
এখন যা বলবো সেটিই কিছুক্ষন পর চেঞ্জ হয়ে যেতে পারে।
স্কারবোরো, কানাডা