শনিবার - জুলাই ২৭ - ২০২৪

নিন্ম ভোটার টার্ন-আউট:একটি বিশ্লেষণ

টরন্টো সিটির নবনির্বাচিত মেয়র অলিভিয়া চাউ

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, কানাডার মিউনিসিপ্যাল পর্যায়ের নির্বাচনে ভোটার টার্ন আউট অনেক কম।

সেই তুলনায় ফেডারেল এবং প্রভিন্সিয়াল পর্যায়ের নির্বাচনে ভোটা প্রদানের হার অনেক বেশি।

- Advertisement -

কিছু দিন আগে হয়ে যাওয়া মেয়র নির্বাচনে ভোটার টার্ন আউট ছিল ৩৮%। এর অর্থ, ৬২% ভোটার ভোট দানে বিরত ছিল। এর আগে ২০২২ সালের মেয়র নির্বাচনে ভোটার টার্ন আউট ছিল আরো করুন। মাত্র ২৯% ভোটার ভোট প্রদান করেছিল। এর অর্থ, ৭১% ভোটার ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।

মিউনিসিপ্যাল পর্যায়ের নির্বাচনের তুলনায় প্রভিন্সিয়াল পর্যায়ের নির্বাচনে ভোট প্রদানের হার মোটামুটি ভালো।

২০২২ সালে অনুষ্ঠিত অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল নির্বাচনে ভোটার টার্ন আউট ছিল ৪৩.৫%।  অর্থাৎ ৫৬.৫% ভোটার ভোট দানে বিরত ছিল।

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল নির্বাচনে ভোটার টার্ন আউট ছিল ৫৮%। এর অর্থ, ৪২% ভোটার ভোট দেয়নি।

ফেডারেল নির্বাচনের অবস্থা মিউনিসিপ্যাল এবং প্রভিন্সিয়াল নির্বাচনের তুলনায় অনেকটা ভালো।

২০২১ সালে অনুষ্ঠিত ফেডারেল নির্বাচনে ভোটার টার্ন আউট ছিল ৬২.২%। আর ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ফেডারেল নির্বাচনে ভোটার টার্ন আউট ছিল ৬৭%।

গনতন্ত্রকে বলা হয় মেজোরিটির সরকার।মোট ভোটারদের ৫১ শতাংশকে ধরা হয় মেজোরিটি বা সংখ্যাগরিষ্ঠ। আর ৪৯ শতাংশকে ধরা হয় মাইনোরিটি বা সংখ্যালঘিষ্ট।

সেই অর্থে, টরন্টো  মেয়র নির্বাচনে শক্তিশালী জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার নির্বাচিত হয়নি এবং একই সাথে বেশ দুর্বল জনমতের প্রকাশ ঘটেছে।। একে ঠিক শক্তিশালী গনতন্ত্রও বলা যায় না।

বিগত দুটি টরন্টো সিটির মেয়র নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দানে বিরত ছিল যথাক্রমে ৬২% এবং ৭১%।

ভোটাররা ভোট দানে বিরত থাকাও একধরনের জনমতের প্রতিফলন।

এই বিরাট অংশ ভোটার  ভোট দানে বিরত থাকার কারন কি

এটা কি একধরনের অনাস্থানাকি ভোট দানে নিরুৎসাহিত থাকা বোঝায়

কানাডার চার্টার অব রাইটস অনুযায়ী এটি কোন অনাস্থার প্রকাশ নয়। খুব নিন্ম ভোটার টার্ন আউট হলেও এখানে সরকার চলতে পারে। তবে এটি অবশ্যই খুব দুর্বল জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার বললে ভুল বলা হবে না।

ভোটাররা নানা কারনেই ভোট দানে নিরুৎসাহ বোধ করতে পারে:

১) শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে ভোটাররা ধরে নেয় নির্দিষ্ট একজনই জয়ী হবেন। সেক্ষেত্রে ভোটাররা আর কষ্ট করে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করতে চায় না। যেমন, ২০২২ সালের টরন্টো সিটির মেয়র নির্বাচনে ভোটাররা ধরেই নিয়েছিল জন টরিই নির্বাচিত হবেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন খুব দুর্বল প্রার্থী।

২) ভোটাররা যদি মনে করেন প্রতিদ্বন্দ্বীকারী প্রার্থীদের মধ্যে কেউ-ই তেমন যোগ্য নন কিংবা  compatible নন তবে তারা ভোট দানে নিরুৎসাহিত হতে পারেন।

৩) ভোটাররা যদি ভাবেন যে-ই নির্বাচিত হোক তাদের অবস্থার কোন পরিবর্তন বা অবস্থার কোন উন্নতি হবে না তবে ভোটাররা ভোট দানে নিরুৎসাহিত হতে পারেন।

উপরের তিনটি কারন ছাড়াও আরো অনেক কারন থাকতে পারে।

ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেতে উৎসাহিত করার দায়িত্ব প্রার্থীদের যেমন থাকে, ঠিক তেমনি একই সাথে সরকারেও দায়িত্ব থাকে।

নিন্ম ভোট দান দুর্বল জনমতভিত্তিক সরকার গঠনে ভূমিকা রাখে। অধিকাংশের মতামত প্রতিফলিত না হলে শক্তিশালী সরকার হতে পারে না। তাকে আমি সংখ্যালঘু জনপ্রিয় সরকার বলবো।

- Advertisement -

Read More

Recent