টরন্টোর স্কুলগুলোতে ইহদিবিদ্বেষী ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে প্রদেশ ও টরন্টো স্কুল বোর্ডকে (টিডিএসবি) লেখা এক চিঠিতে দুই হাজার বাবা-মা স্বাক্ষর করেছেন। ২১ নভেম্বর কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিভিন্ন ধরনের ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শিশুদের নাৎসি স্যালুট দেওয়া, বাসের জানালায় স্বস্তিকা চিহ্ন আঁকা, বাথরুমে ইহুদিবিদ্বেষী গ্রাফিতি আঁকা, ইহুদি শিশুদের চিহ্নিত করতে তাদের ডেস্কে ইহুদি তারকা রেখে দেওয়া, শারীরিক সহিংসতা, হুমকি দেওয়া এবং গ্যাস চেম্বার ও হিটলারের প্রসঙ্গ আনা এবং কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো এর মধ্যে অন্যতম।
চিঠিতে চারটি স্কুলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো ফেউড এবিসি স্কুল, হজসন মিডল স্কুল, উইন্ডফিল্ডস মিডল স্কুল এবং নর্দার্ন সেকেন্ডারি স্কুল।
এই স্কুলগুলোর একটিরও শিক্ষার্থী নয় গ্রেড ১১-এর জমজ বোন মারিসা ও সোফি। তারপরও সিটিভি নিউজকে তারা জানায়,তাদের স্কুলেও এ ধরনের সমস্যা নিয়মিত বিষয়।
মারিসা বলে, ২১ নভেম্বর হামলার পর আমার ক্লাসের একজন শিক্ষার্থী একজন ইহুদি শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে। সে বলে, যা ঘটছে ইসরায়েলের সেটা প্রাপ্য। ইসরায়েলের এই হামলা প্রাপ্য।
মারিসা ইহুদিবিদ্বেষ বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তার শিক্ষকের কাছে একটি চিঠি লিখেছে। বিষয়টির ব্যাখ্যা করে মারিসা বলে, আমি শিক্ষকের কাছ থেকে চিঠির জবাব পেয়েছি। তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং শিক্ষা দিতে তারা স্বস্তি বোধ করছেন না।
মারিসা জানায়, সম্প্রতি হলোকস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি তাদের স্কুলে বক্তৃতা দিতে এলে একজন শিক্ষার্থী তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দেয়। তাতে লেখা ছিল, যা ঘটছে তা দেখলে হিটলার গর্ব বোধ করতেন।
সোফি বলে, ভুয়া তথ্য এবং প্রশাসনের তরফ থেকে ব্যবস্থা না নেওয়া আমাদের হতাশ করছে। কেউ-ই এর মধ্যে থাকতে চায় না। কারণ, এটা খুবই বাজে।
শিক্ষামন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন রবিন, মারিসা ও সোফির মা। তিনি বলেন, নেতৃত্ব ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা না দেওয়ার অভাব, আমাদের ইহুদি শিক্ষার্থীদের বিচ্ছিন্ন করা এবং অন্যদেরকেও একই অনুভূতির মধ্য দিয়ে যেতে দেওয়ার মতো একটার পর একটা ঘটনা আমাদের হতাশ করেছে। হাইস্কুলে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে এবং বর্তমান ঘটনা নিয়ে প্রশাসন কথা বলার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। শিশুরা সত্যিই বিচ্ছিন্ন বোধ করছে।
সিটিভি নিউজকে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিডিএসবি বলেছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইহুদিবিদ্বেষ ও ইসলামোফোবিয়ার ঘটনা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। প্রত্যেকটি ঘটনা আলাদা আলাদাভাবে দেখা হচ্ছে। টিডিএসবির কার্যপরিধি ও শিক্ষা আইন অনুসারে এর ফলে যেসব ব্যবস্থার বিধান রয়েছে বহিস্কার তার মধ্যে অন্যতম।