বৃহস্পতিবার - মে ৯ - ২০২৪

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা এবং

খালেদা জিয়ার অসুস্থ্যতার কারনে তার পরিবার থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
যতটুকু জানা সম্ভব হয়েছে, এই চেষ্টার অংশ হিসাবে খালেদা জিয়ার পরিবার সরকারের সাথে একটি সমঝোতায় আসতে চাচ্ছে।
কিন্তু সরকার থেকে সমঝোতার জন্য একটি মাত্র পথ দেখানো হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে মোহাম্মদ হানিফ যে পথটি বাতলে দিয়েছেন, তা হচ্ছে, যেহেতু খালেদা জিয়া দন্ডপ্রাপ্ত আসামি সেহেতু তাকে রাষ্ট্রপতির কাছে সাজা মওকুফের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। রাষ্ট্রপতি যদি সেই প্রার্থনা মঞ্জুর করেন তবে তার সাজা মওকুফ হয়ে যাবে এবং তিনি মুক্ত মানুষ হিসাবে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারবেন।
এই ধরনের ক্ষমা চাওয়ার অর্থ হবে, ইতিপূর্বে খালেদা জিয়ার যে আপোষহীন নেত্রীর ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছিল সেই মূর্তিটিকে ভেংগে ফেলা। সরকারের উদ্দেশ্যও সেই রকমই মনে হচ্ছে।
অনুমান করা অসম্ভব নয়, এমন একটি সমঝোতার প্রস্তাবে খালেদা জিয়া রাজি হবেন না।
আর সরকারের উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে তাদেরকে বাধ্য করার মত আন্দোলনও বিএনপি গড়ে তুলতে পারেনি এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে পারবে বলেও মনে হয় না।
ফলে, খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা যেমন আছে তেমনই থেকে যাবে। অর্থাৎ তিনি মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাচ্ছেন, এমটি হবে না।
আমার অভিমত হচ্ছে, খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায় সরকার নিতে যাচ্ছে কে? সরকার যতই আইনি মারপ্যাঁচ দেখাক না কেন, খালেদা জিয়ার কিছু হলে এদেশের জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ সরকারকে দায়ী করবে চিরকাল। তারা বলবে, সরকার সুযোগ থাকা স্বত্তেও খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ না পাঠিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। সরকার ইচ্ছে করলে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা জন্য বিদেশ পাঠাতে পারতো কিন্তু তারা খালেদা জিয়ার মৃত্যু চেয়েছে দেখে তাকে বিদেশে পাঠায়নি। আরো কথা উঠবে, সরকার খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে প্রকারান্তরে হত্যা করেছে।
সরকার শক্তিশালী যুক্তি দেখিয়েও এমন একটি দায় তার কাধ থেকে নামাতে পারবেন বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে না।
কেউ স্বীকার করুক না করুক বিএনপি বাংলাদেশের একটি বৃহৎ দল আর এই দলটির শক্ত জনসমর্থন রয়েছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সমর্থকের চেয়ে আওয়ামী বিরোধী শক্তি বেশি।
তাই খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য না পাঠালে, এখানে তার কিছু হয়ে গেলে এই বিপুল সংখ্যক সমর্থক সরকারকে চিরকাল দায়ি করবে। আর এর ফলে প্রতিহিংসার রাজনীতি আরো প্রকট আকার ধারন করবে।
প্রতিহিংসার শিখা প্রজ্জ্বলিত থেকে যাবে। একে অপরকে সংহারের যে রাজনীতি তা চিরস্থায়ী রূপ নিবে।
এমনটি সরকার চান কিনা সেটি তাদেরকে ভেবে দেখতে হবে।
আমি খালেদা জিয়ার পক্ষে কোন ওকালতি করছি না। আমি বিএনপি নামক দলটির সমর্থক নই, কোন দিন ঘুনাক্ষরেও ছিলাম না, হবোও না ।বিষয়টি ভাবনার মধ্যে এসেছে বলে ফেসবুক বন্ধুদের সাথে ভাবনাটি শেয়ার করলাম।

- Advertisement -

স্কারবোরো, টরন্টো

- Advertisement -

Read More

Recent