রবিবার - মে ১৯ - ২০২৪

রোগবালাই নিয়ে কিছু লেখা

ছবিজেনিস ব্রান্ট

অনেকদিন হয়ে গেল রোগবালাই নিয়ে কিছু লেখা হয় না। ভাবছি, ডায়াবেটিস নিয়ে লিখব। মানুষকে শেষ করে দেয়া একবিংশ শতাব্দির রোগটির নাম ডায়াবেটিস, মজার বিষয় হচ্ছে কয়েকশ বছর আগে মানুষ এর নামই জানতো না। আমরা সভ্য হতে গিয়ে প্রকৃতির উপর যত মাতব্বুরি করেছি, তাকে আর যাই বলা হোক, সুবিবেচনা বলা যাবে না। যাকগে, ডায়াবেটিসে আসি। এতদিনধরে জেনে আসা সত্যকে এবার ভ্রান্ত বলে প্রমান করে দিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী ড. মধু এস. মালো। বাংলাদেশেরই সন্তান, কাজ করেন হার্ভার্ডে। তিনিই এক বিস্ময়কর আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ডায়াবেটেেসের জন্য দায়ি হচ্ছে মৃত ব্যাকটেরিয়া, বিশেষ করে তাদের মৃত শরীর থেকে উৎপন্ন হওয়া টক্সিন, যা শরীরে ঢুকতে পারলে খবর করে দেয়। ইমিউন সিস্টেম অবশ্যই যুদ্ধ করে, মরে মারে; কিন্তু, দিনশেষে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। ফলাফল― ডায়াবেটিস। আর ডায়াবেটিস যেন না হয়, সেই দায়িত্বও পালন করে কিছু ব্যাকটেরিয়া।
ড. মালো থেকেই পড়া যাক:
“এপি বা অ্যালকেলাইন ফসফেটাস মানবশরীরে কয়েক ধরনের আছে। যার মধ্যে আইএপি খাদ্যনালিতে তৈরি হয়ে সেখানেই কাজ করে। আমাদের খাদ্যনালিতে ১০০ ট্রিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া থাকে। বেড়ে বা কমে গেলে শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে গেলে অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়াকে শরীর মেরে ফেলে। সেসব মৃত ব্যাকটেরিয়া এন্ডোটক্সিন হিসেবে শরীরে প্রবেশ করলে শরীরের প্রতিরোধব্যবস্থা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। ফলে শরীরের প্রতিরোধব্যবস্থার সঙ্গে টক্সিনের যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি হলে যুদ্ধক্ষেত্রের যোদ্ধারা ছাড়াও আশপাশের অন্য কোষ বা টিস্যু ক্ষতির মুখে পড়ে। যেমন ইনসুলিন প্রস্তুতকারী কোষ বা ইনসুলিন যার সঙ্গে বন্ধন তৈরি করে তার ক্ষতিসাধন করে। একে দীর্ঘমেয়াদি লঘু প্রদাহ বলা হয়ে থাকে। ফলে ধীরে ধীরে তার ডায়াবেটিস হয়। আইএপি এই কাজ প্রতিরোধ করে। ”
তো কী করতে হবে?
সহজ উত্তর: আইএপি বাড়াতে হবে। সেজন্য কাঁচা হলুদ প্রতিদিন। আর অ্যান্টিবায়োটিক থেকে সাবধান। শত্রু মারতে গিয়ে বহু বন্ধু ব্যাকটেরিয়াকে এটা মেরে ফেলে। মরা ব্যাকটেরিয়া কী কম ধ্বংস বয়ে আনে? বন্ধু ব্যাকটেরিয়া যেন বেঁচে থাকে সেজন্য ফাইবার যুক্ত খাবার, যেমন সবুজ শাকসবজি, মিষ্টি আলু, মাশরুম খেতে হবে বেশি করে। আর ফ্রুকটোজ (fructose) থেকে একশ হাত দূরে থাকুন। ভুট্টায় এবং মিষ্টি ফলে ফ্রুকটোজ বেশি। চিনির অর্ধেক ফ্রুকটোজ। এই এক জিনিষ যা মানব শরীরের কোন কাজে লাগে না এবং লিভারকে বাধ্য হয়ে আমাদের বোকামীকে হজম করতে হয় এবং ক্রমশ: সে ফ্যাটিলিভারে পরিণত হয়। তো লিভারের সেই ফ্যাটেই টক্সিন জমার সুযোগটা পেয়ে যায়। কোক ফান্টা তো বটেই, বাজারে যত প্রসেসড খাবার, সব ফ্রুকটোজ কর্ণ সিরাপে ঠাসা। ফ্রুকটোজ তো বটেই, লেপটিনের মতো প্রোটিনও খাদ্যনালীর গা ফুটো করে দেয় যে ফুটো দিয়ে মরা ব্যাকটেরিয়া শরীরে ঢুকে পড়ার সুযোগ পেয়ে যায়। লিকি গাট ঠেকাতে প্রচুর টক দই এবং মাঝে মাঝে নেহারী (বোন ব্রোথ) খেতে হবে।

ক্যালগেরি, আলবার্টা

- Advertisement -

Read More

Recent