রবিবার - মে ১৯ - ২০২৪

সীমানা কি নিশ্চিন্তে পেরিয়ে গেলাম

অন্যদেশের সীমানা কি নিশ্চিন্তে পেরিয়ে গেলাম। একের পর এক শহর পেরিয়ে অনেক দূর ঘুরলাম । কোভিড করোনা নিয়ে কেউ কোন প্রশ্ন করল না। না থাকার হোটেলে, না রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে ফাস্টফুড বা ব্রেকফাস্ট প্লেসে খেতে। সব খুব স্বাভাবিক আগের মতন মনে হলো ওদেশে।

- Advertisement -

অনেকদিন পর নিজেও মাস্ক না পরে ঘুরলাম। অবশ্য বেশির ভাগ সময়ই বাইরে ঘোরা ফেরা ছিল তাই নিশ্চিন্ত মনে বেড়ালাম মাক্স খুলে।  ছবি উঠানোর জন্য ক্ষনে ক্ষনে দাঁড়াচ্ছি এখানে ওখানে মাস্ক পরা খোলা গুছিয়ে রাখা অনেক সময়ের ব্যাপার। তাই এক সময় পরাই বাদ দিলাম। আর যখন কোন খাবার দোকানে ঢুকছি সে সময়টাও শুধু ঐ ঢুকা পর্যন্তই পরে থাকা। তারপর খাবার খেতে আবার খুলে ফেলা। ভীড় করে মানুষ মুখোস খুলে খাচ্ছে অনেকটা প্লেনের মতন। সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকতে হবে কিন্তু সবাই খাবার সময় মাস্ক খুলে ফেলছে।

তো প্রথম দুদিনের পর মাস্ক পরার কথা মোটামুটি ভুলেই গেলাম।

কয়েকদিন ধরে ঘুরলাম আগের স্বাভাবিক জীবনধারায় যেন। চারপাশের মানুষও মাস্ক ছাড়া সবাই হঠাৎ দু একজন পরে আছে তাদের যেন বেমানান মনে হয়। এমনকি  রেস্টরেন্টেও দেখলাম ওযেটাররাও মুখ খোলা অবস্থায়। কয়েকদিন ঘোরা ফেরা ভিন্ন জায়গায় তারপর বাড়ির পথ ধরলাম।

রাতের বেলা যখন ফিরে এলাম নিজের দেশের সীমানায়, তখনই এই কদিনের মধ্যে প্রথম কোভিট প্রুভ কাগজপত্র চাইল। এমন স্বাভাবিক হয়ে ছিলাম। কোভিটের ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞস করবে এমনটা আশাই করি নাই। এই মহামারি এখনও আছে! ভুলেই গিয়েছিলাম একদিন এর কথা।  জিপিএস বারেবারে সাবধানী দিচ্ছিল এই সীমানায় কোভিড চেক করবে। যতবার জিপিএস বলছিল, আমরা সবাই হাসছিলাম আর বলছিলাম ইস তুই থাম আর কোভিড কোভিড বলিস না।

অথচ যখন কাগজপত্র চেয়ে বসল সীমানা প্রহরি তখন তো মাথায় বারি মনে হলো । এখন কি বাড়ি যেতে দিবে না। ঢুকতে দিবে না দেশে।

দেখ তিন খানা টিকা নেয়া আছে আমাদের। তাতে কিছু হবে না। তোমাদের ফর্ম পুরন করতে হবে। তাইলে এখন করে দেই । হাতে হাতে মোবাইল আর ইন্টারনেট সংযোগ আছে । তাও হবে না। সীমানায় আসার আগে ফর্ম পূরন করে কাগজ প্রিন্ট করে নিয়ে আসতে হতো।

এখন তা হলে কি করা। আমাদের যেতে দিবে না?

যাও, তবে চৌদ্দোদিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকবে। ঘোরাফেরা একদম করবে না, আদেশ জারি করে, কোথায় কাজ করা হয় সে সব খবর নিয়ে ছেড়ে দিল।

ফর্ম পূরন করে আসলে কোন কথা ছাড়া আসা যেত। আর ফর্ম পূরন না করার জন্য ঘরে বন্দী থাকার নির্দেশ। নিয়মটা জেনে মনে হলো এজন্যই সীমানার এপাড়ে এত কম ছিল আক্রান্ত সংখ্যা যখন সীমানার ওপাড়ে দিনে মিলিয়ন মানুষ মারা যাচ্ছিল।

দেখেছি একজন আক্রান্ত হলে তার সূত্র কিভাবে খুঁজে বের করে ফেলেছে। কে কোভিড আক্রান্ত সিস্টেম নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছে জনগনের মধ্যে, কোথায় কোথায় গিয়েছে আর কাদের মধ্যে ছড়িয়েছে। ঠিকঠাক পেয়ে গেছে তারা সব খবর।

একটা দেশের নিয়ম কড়াকড়ি হলে অনেক সময় তা নিজেদের জন্য বাড়তি ঝামেলা মনে হতে পারে কিন্তু সর্ব সাধারনের জন্য ভালো। যা সবাইকে সুরক্ষা করে। ফর্ম পূরন করে নিয়ে না আসার জন্য নিজেই লজ্জা পেলাম। যা নিয়ম তা পালন করা উচিত।

 

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent