রবিবার - মে ১৯ - ২০২৪

মুজিব : দ্য মেকিং অফ এ্যা নেশন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনির উপর নির্মিত বায়োপিক “Mujib The Making of a Nation” নিয়ে বেশ হৈচৈ হচ্ছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন সেই আরিফিন শুভর অভিনয় নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছে। তিনি বঙ্গবন্ধুকে খুব একটা ফুটিয়ে তুলতে পারেননি। এর উত্তরে আরেফিন শুভ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পরিচালক শ্যাম বেনেগাল নাকি তাকে বলেছেন বঙ্গবন্ধুকে কপি করার কোন প্রয়োজন নেই। তুমি তোমার মতো করেই অভিনয় করো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে তুলে ধরতে পারলেই হলো।
আমি জানি না শ্যাম বেনেগাল আরিফিন শুভকে এই নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা। কারন, রাজনীতিবিদদের জীবনি নিয়ে এই পর্যন্ত যত চলচ্চিত্র হয়েছে তার সব গুলিতেই মোটামুটি সেই সব রাজনীতিবিদদের তারা বাস্তব জীবনে কেমন ছিলেন চলচ্চিত্রেও অভিনেতারা তা ফুটিয়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। এর কারন হচ্ছে, মানুষের হৃদয়ে একজন রাজনীতিবিদ বা নেতার যে ছবি অংকিত হয়ে আছে, মানুষ চলচ্চিত্রে তাকে সেইভাবে দেখতে না পেলে আশাহত হয়। অভিনেতার বেশ-ভুশা, চুল থেকে আরাম্ভ করে চশমা পর্যন্ত যদি কপি করা হয় তবে একজন নেতার ব্যক্তিত্ব, আচার-আচরণ, বাচন-ভংগি, চাল-চলন ইত্যাদি বিষয়গুলি কপি করতে অসুবিধা কোথায়? এটাকে ঠিক কপি করা বলাও ঠিক নয়। একজন নেতা বাস্তবে কেমন ছিলেন তাকে সেইভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা। দর্শকের মনে নেতার যে ছবিটি অংকিত হয়ে আছে সেই ছবিটিকেই দর্শকরা যেন চলচিত্রের মধ্যে খুঁজে পায় সেই চেষ্টাই একজন অভিনেতার অভিনয়ে দেখা গেলে সেটাই অভিনয়ের আসল সার্থকতা।
আমরা অনেকেই পরিচালক রিচার্ড এটেনবরোর গান্ধী ছবিটি দেখেছি। গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বেন কিংসলি। তার অনবদ্য অভিনয় দেখে মনে হয়েছে সত্যিকারের মহাত্না গান্ধী আমাদের চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। নিখুঁত অভিনয়!!তিনি গান্ধীজীকে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিলেন। সেই ছবি দেখে দর্শকদের মনের আশা পূরণ হয়েছিল।
এটা ঠিক, বঙ্গবন্ধু যে বিশাল ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন, তার চাল-চলন, বাচণভংগি, কন্ঠস্বর ইত্যাদি চরিত্রের মৌলিক বিষয়গুলি ফুটিয়ে তোলা যেকোনো অভিনেতার জন্য কঠিন কাজ।
আমি যতদূর জানি, কোন রাজনীতিবিদের চরিত্রে অভিনয় করতে গেলে অভিনেতা তাকে নিয়ে মোটামুটি স্টাডি করেন, নিজে নিজে প্যাকটিস করে সেই চরিত্রকে নিজের মধ্যে আত্নস্থ করার চেষ্টা করেন। বঙ্গবন্ধুর অসংখ্য ভিডিও আছে, তার অসংখ্য বক্তিতার ভিডিও আছে। আরেফিন শুভ সেইগুলি কি স্টাডি করেছেন, নিজে নিজে প্যাকটিস করে আত্নস্থ করার কি চেষ্টা করেছিলেন? তার অভিনয়ে সেই শ্রম দেখা যায় নি।
অবশ্য আরিফিন শুভ বলেছেন স্বল্প সময়ের ট্রেলারে যা এসেছে তা আসল নয়, আরো কাজ বাকি আছে।
ইতিহাস বিকৃতিরও প্রশ্ন এসেছে। বঙ্গবন্ধু কোথায় বলেছেন, “ভারত বাংলাদেশ ভাই ভাই”? এর প্রেক্ষাপট কি?
৭ ই মার্চের ভাষনে আরেফিন শুভর উচ্চারণ ঠিক হয়নি। “মুক্ত করে ছাড়বো “-র জায়গায় বলেছেন ” মুক্ত করে থারবো!!
শ্যাম বেনেগালের মত বড় পরিচালক এমন কাচা কাজ করবেন তা ভাবা যায় না।

- Advertisement -

স্কারবোরো, অন্টারিও, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent