রবিবার - মে ৫ - ২০২৪

আজলায় ভরা টলটলে জল

‘কর’ অর্থ হাত। ‘তোয়া’ মানে জল। করতোয়া শুনলেই চোখে ভাসে হাতের আজলায় ভরা টলটলে জল। যে জলে প্রথম সাঁতার, প্রথম জলজ শিহরণ আমার!
উৎপত্তি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জলপাইগুড়ি জেলায়। একসময় করতোয়া ছিলো তিস্তার শাখা নদী। করতোয়ার মাধ্যমেই তিস্তার পানি আত্রাই হয়ে পদ্মায় মিলিত হতো। ১৭৮৭ সালের ২৭ আগস্ট তিস্তায় প্রলয়ঙ্করী বন্যা হয়। বানের পানিতে প্রচুর পলি (Silt) আমদানী হয়। পলিজমাটে (Sedimentation) করতোয়ার সাথে তিস্তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
তিস্তার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর করতোয়া তার মূল স্রোতধারা হারিয়ে খর্বকায় হতে থাকে। ধীরে ধীরে করতোয়া পাঁচটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। প্রথম অংশ ভারত থেকে আসা। উত্তরের দ্বিতীয় অংশের নাম হয় দিনাজপুর-করতোয়া। প্রকৃতপক্ষে এটি আত্রাই নদীর প্রধান উৎস। দিনাজপুর-করতোয়া বহুকাল আগে খানসামা উপজেলার উত্তরে রংপুর-করতোয়ার সঙ্গে সংযুক্ত ছিলো। বর্তমানে সে নদীতে সামান্য পানি প্রবাহিত হয়।
সৈয়দপুরের কাছে রংপুর-করতোয়ার উৎপত্তি। এখান থেকে দক্ষিণপূর্ব দিকে এঁকে বেঁকে গোবিন্দপুর উপজেলা পর্যন্ত গিয়েছে। সেখান থেকে মূল স্রোত কাটাখালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাঙ্গালী নদীতে পতিত হয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলায় এ নদীর যে অংশ প্রবাহমান, তা বছরের অধিকাংশ সময় শুষ্ক থাকে। এটি রংপুর-করতোয়াকে বগুড়া-করতোয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।
বগুড়া-করতোয়া বাঙ্গালী নদী হয়ে ফুলঝুড়ি নদী পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে। ফুলঝুড়ি নদী আবার করতোয়া রূপে বড়াল হয়ে হুরাসাগর নদীতে পতিত হয়েছে। এই পঞ্চম অংশের নাম পাবনা-করতোয়া।
পাবনা-করতোয়া সিরাজগঞ্জ জেলার বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরের নিকট বড়াল নদীতে সমর্পিত হয়েছে।
ছবি (২০১৭) : বড়াল ও করতোয়া নদীর মোহনা। স্মৃতির মোহনায় নৌকার পাটাতনে দাঁড়িয়ে আমি। প্রাণের শেলাচাপড়ি গ্রামে। বাপ দাদার ভিটে যেখানে।

- Advertisement -

ব্রামটন, অন্টারিও, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent