রবিবার - মে ১৯ - ২০২৪

অনাবাসী জীবনের চতুর্থ বছর


কানাডায় এসেছি দেখতে দেখতে চার বছর হলো। কেন এসেছি,কিভাবে এসেছি সেই গল্প আরেকদিন হবে। তবে আজকের দিনটি এই ক্ষুদ্র জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার দিন হিসেবে আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
চার বছরের যোগ-বিয়োগ হিসেব নিকেশে অনেক কিছুই যেমন হারিয়েছি, তেমনি প্রাপ্তিও কম নয়।
কানাডায় আসার পর ছয়মাসের মধ্যে বাবা হারানো ও তার অন্তিমমুর্হুতে পাশে না থাকতে পারার এই দুঃখ সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে। এছাড়া দেশ বিদেশে হারিয়েছি অসংখ্য প্রিয় ব্যক্তিবর্গ, বন্ধু ও নিকটজনকে।
এই ক’বছরে বিশ্বব্যাপী ঘটেছে নানান উত্থান পতন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্বন জয়ন্তী উদযাপন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী, বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি, কোটি মানুষের মৃত্যু, দেশে দেশে আতংকিত অসহায় মানুষের বাঁচার আর্তি,করোনা প্রতিরোধে চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগান্তকারী প্রতিষেধক আবিস্কারের সাফল্য, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি দাম বৃদ্ধ্বির প্রভাবে তেলের সংকট ও দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি , ডলারের আধিপত্য ক্ষুন্ন ও রুবলের উত্থান, ব্ল্যাক লাইভস মেটার মুভমেন্ট, তালেবান উত্থান, দাম্ভিক ট্রাম্পের পতন, বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকার প্রভাব খর্ব ও নখদন্তহীন হয়ে পড়াসহ নানান ঘটনায় পৃথিবী অস্থির একটা সময় পার করছে।
দূরে ও কাছে থেকে কত কিছুর স্বাক্ষী হয়ে গেলাম! আতংকিত সময় পার করে নতুন স্বাভাবিক জীবন বা নিউ নরম্যাল লাইফে বিশ্ব ফিরছে। ঠিক এরকম সময় ২৯ জুন, আমার অনাবাসী জীবনের চতুর্থ বছর পূর্ন হলো।
এদিনে খুব মনে পড়ে, কানাডায় আমি যাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা,স্নেহ পেয়েছি। সবার প্রতি আমার সশ্রদ্ধ সালাম ও কৃতজ্ঞতা।
আজকের দিনে আমার জীবনে দু’জন মানুষের ভালবাসা ও সহ্রদয় সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরন করছি। এই দু’জন মানুষ হচ্ছেন টরন্টোর জনপ্রিয়মুখ, আমার প্রিয় বাচিক শিল্পী মেরী রাশেদীনআপা ও রাকিবভাই। কানাডার টরন্টো পিয়ারসন্স বিমানবন্দর হতে রিসিভ করা ও তাদের বাসায় আদর যতনে রেখেছেন।
এ দু’জন মানুষের ভালবাসা ও স্নেহের কাছে আমার ঋন শোধ হবার নয়।
টরন্টোতে মেরি আপা ও রাকিবভাইয়ের বাসায় এক সাপ্তাহ থাকার পর বেশ ক’দিন ছিলাম এটিএন বাংলার সাবেক সিনিয়র প্রোডিউসার, বন্ধু তারেক রিপনের এভিনিউ বার্থার বাসায়। সেখানে সাংবাদিক এসএম বাবুভাই ও রিপন দু’জন আমাকে যথেস্ট সময় এবং নানানভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিল।
এসব ভুলি কি করে?
দু’জনের প্রতি অবিরাম ভালবাসা।
পরিশেষে মন্ট্রিয়েল বসবাসকালীন সময় চারজনের কথা বলতেই হবে, এরা হচ্ছেন হাবিব সুমনভাই, মিহির কান্তি রাউত, জুবায়ের টিপু ও কাজী মাজহারুল ইসলাম বিপুলভাই।
মন্ট্রিয়েল শুধু নয়, কানাডায় আমার আসার পিছনে যে মানুষটি শুরু থেকে আজো নানানভাবে আমাকে উৎসাহ ও প্রেরণা যুগিয়েছেন তিনি আমার অত্যন্ত প্রিয়জন সুমনভাই।
লাভ ইউ ভাই।
মন্ট্রিয়েলে আমি আসার পর ছড়াকারবন্ধু মিহির আমাকে নানানভাবে বুদ্ধি, পরামর্শ, কাজের সন্ধান দিয়ে সব সময় পাশে ছিল। এক জীবনে তার কাছেও অনেক ঋনী হয়ে রইলাম। অনেক ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা মিহির।
সঙ্গীতশিল্পী জুবায়ের টিপুর সাথে আমার সম্পর্ক চাচা ভাতিজা। ছোটখাটো এই মানুষটি অসম্ভব উদার ও বিশাল হ্রদয়ের অধিকারী। টিপু, আমার মন্ট্রিয়েল থাকা,খাওয়ার সকল ব্যবস্থা করেছিল। হাসিখুশি এই মানুষটির কথা সারাজীবন মনে থাকবে। অনেক ভালবাসা টিপু।
সাংবাদিক কাজী মাজহারুল ইসলাম বিপুলভাই আমার ইমিগ্রেশন,ব্যাংক,ফোন,মেট্রো সার্ভিস থেকে শুরু করে এহেন কাজ নেই যিনি আমাকে বটবৃক্ষর মতন ছায়া দিয়ে সব কাজ করে দিয়েছেন। অনেক কৃতজ্ঞতা বিপুলভাই।

মন্ট্রিয়ল, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent