আমি নারীবাদী নই।
কিন্তু নারীদের নিয়ে গড়পরতা কদর্য মন্তব্য করলে, অসম্মান করলে গায়ে বড্ড লাগে। শুধু নারী কেন… যাচ্ছেতাইভাবে, অন্যায়ভাবে, অমূলকভাবে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে যে কোন মানুষ কিংবা গোষ্ঠীকে হেয় করলেও গায়ে লাগে।
চোখ আটকে গেল! দেখছি ফেসবুকে মেয়েদের ছোট করে লেখা জঘন্য কিছু কথা ঘুরে বেড়াচ্ছে- “আসলে নারীরা কিসে আটকায়” যারা এ ধরণের পোস্ট শেয়ার করছেন, পড়ে বিনোদিত হচ্ছেন এবং নিজেরাও রসালো মন্তব্য করছেন- এক কথায় তাদেরকে আমার বিকৃত মানসিকতার মানুষ মনে হয়েছে।
বিবাহ আছে বলে বিচ্ছেদও আছে। আপনাদের কাছে তারাই বাহবা পায় যারা বাচ্চাকাচ্চার সামনে, পরিবারের সকলের সামনে গালাগালি, কামড়া-কামড়ি করে আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে সংসার টিকিয়ে রাখেন। (অনেকে জড়িয়ে পড়েন পরকীয়া সম্পর্কে)। আর কি আশ্চর্য!
আত্মসচেতন এবং আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন কোনো দম্পতি যদি দিনের পর দিন মানসিক অশান্তির মধ্যে না গিয়ে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন, তাহলেই আপনারা তাকে খারাপ মানুষের তালিকায় ফেলে দেন! আচ্ছা, আপনারা কারা তাদের জাজ করার? আপনাদের এতো উৎসাহ কেন বলুন তো?
বিল গেটসের ডিভোর্স কেন হলো, তাহসানের বউ কেন চলে গেল,
হৃত্বিক রোশানের সংসার কেন টিকলো না… এতো ভাবনা কেন অন্যদের সংসার নিয়ে?
অন্যদের কথা বাদ দিই- সম্প্রতি বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে হইচই ফেলে দেয়া ট্রুডো দম্পতির সন্তানদের নিয়ে ভাবনা কি আপনার-আমার চেয়ে কম? আপনাদের কি মনে হয় তারা ঘাস খেয়ে বেড়ায়? সহজ কথায় তাইতো বলতে হচ্ছে – নিজের পশ্চাৎদেশে দূর্গন্ধ রেখে অন্যের পশ্চাৎদেশ শুঁকতে যাওয়া এই ধরণের মানুষগুলো একেকজন জলজ্যান্ত পারভার্ট।
বন্ধু তালিকায় থাকা কারো দেয়ালে যদি এমন পূতিগন্ধময় লেখনী আমার চোখে পড়ে, তাহলে তাৎক্ষণিক তাকে আনফ্রেন্ড করবো। সত্যিই স্তম্ভিত হয়ে গেছি তথাকথিত শিক্ষিতগণ, সাংবাদিক, শিক্ষক, সমাজকর্মীদের গা গুলিয়ে ওঠা রসালো আলোচনায় অংশ নিতে দেখে।
শুনুন, আপনাদের যেমন অধিকার আছে নিজের দেয়ালে যা খুশি লিখে আনন্দ বিকীরণ করার, আমারো তেমনি অধিকার আছে এমন বিকৃত চেতনার মানুষদের ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে বাদ দেবার।
নারী বা পুরুষ বলে নয়— মানুষের ব্যক্তি জীবনের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাটুকু রাখুন।