শনিবার - জুলাই ২৭ - ২০২৪

জ্বরনামা

তিনটা মেট্রো চেঞ্জ করে নটার মধ্যে কাজে চলে গিয়েছি কিছু বাড়তি কাজে ডুবে যাওয়ায় ভুলে গিয়েছিলাম তাঁর কথা

তাকে আর ঠেকিয়ে রাখা গেল না!

গতকাল রাত থেকে একটু একটু করে জানান দিচ্ছিল,আমি কিন্ত আসছি!

- Advertisement -

আরে বাবা,জানান দেয়ার কি আছে, আসলে,আসো।

কিন্তু সে এলো না।

সকালে আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠতে সেও জানাল আমি আসছি।

রাতে যেহেতু আসেনি, তাই তাঁর এই আসা- না আসাকে পাত্তাই দিলাম না।

আসলে, আসবে।

তিনটা মেট্রো চেঞ্জ করে ন’টার মধ্যে কাজে চলে গিয়েছি। কিছু বাড়তি কাজে ডুবে যাওয়ায় ভুলে গিয়েছিলাম তাঁর কথা।

দুপুরে চোখ রাঙালো।

“কী আমাকে পাত্তা দিচ্ছো না, ঠিক আছে মজা বুঝাচ্ছি।”

আমি কি আর এসবে ভয় পাই?

আমার সাহস, মনোবল দেখে সে অলক্ষ্যেই হাসে।

দুপুর একটার পর হতে মহাযন্ত্রনা দেয়া শুরু করলো। তাঁর যন্ত্রনায় আমি কাজই করতে পারছিলাম না। এতো বিরক্ত করলে কি কাজ করা যায়!

ক্রমাগত বিরক্ত করায় আমি তাকে সামাল দিতে পারছিলাম না। তাই, একবার ভেবেছি, কাজ ছেড়ে বাসায় ফিরে যাব। কিন্তু পরক্ষনেই মনে হয়, সাপ্তাহ শেষ হতে আরো দুইদিন বাকী। তাঁর ভয়ে এখন কাজ হতে ফিরে গেলে আর্থিকভাবে আমি ক্ষতিগ্রস্থ হবো।মাসের প্রথমদিনে ক্ষতিগ্রস্থ হতে চাইনি বলে তাকে কিভাবে দূরে ঠেলে দেয়া যায়, সেই ফন্দি আঁটতে থাকি।

বেলা দেড়টায় তপুদা’কে বলি, কি করা যায় বলেন তো?

আচ্ছা,আমি চেঞ্জিংরুম থেকে ব্যাগ চেক করে এসে জানাচ্ছি।

আচ্ছা, দ্রুত আসেন। আমি তাঁর যন্ত্রনায় দাঁড়াতে পারছি না।

আপনি কি লাঞ্চ করেছেন?

না রে ভাই।

তাহলে এক্ষুনি করে নিন। আমি ফিরে এসে দেখছি।

বেলা তিনটায় চারিদিক কাঁপিয়ে, দুড়মুড় করে সে মহাসমারোহে এলেন।

তখন তাকে ঠেকিয়ে রাখার শক্তি আমার নেই। তাঁর তান্ডবে আমার গলা, জিভ শুকিয়ে গেছে। ঘেমে নেয়ে বিচ্ছিরি অবস্থা।

মাথা কি চক্কর দিয়েছিল, মনে নেই।

আমাকে পরাস্ত করার উল্লাসে তার হো হো হা হা হাসির ফোয়ারায় আমার শরীর পুড়ে যাচ্ছে। চোখ দু’টো আগুন লাল হয়ে গেল।

তপুদা’ ফিরে এসে হাতে ধরিয়ে দিলেন, এডভিল।

টায়ানল নেই?

না, এটা ভাল। খেয়ে নিন।

এক গ্লাস পানিসহকারে ঢক করে গিলে ফেললাম এডভিল।

কিছুক্ষন পর পরাস্ত শরীর একটু ভাল লাগায় বাসায় ফিরে আসতেই আবারও সে আমার পিছু নিয়েছে। তাকে ঠেকিয়ে রাখার চেস্টা না করে হাল ছেড়ে দিয়ে দিনশেষে শয্যায় নিতে হলো।

মন্ট্রিয়ল, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent