রবিবার - মে ১৯ - ২০২৪

ট্রানজিট সময়টাও পার হয়ে গেছে

আগেই জেনেছিলাম উক্ত পদে সহকারী পরিচালক (সমন্বয়) তার প্রিয়ভাজন একজনকে পদায়ন করেছেন তাই তিনি আমাকে মহাপরিচালকের সাথে দেখা করতে দিলেন না

- Advertisement -

কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের চাকরী মাত্র ২০ দিন হয়েছে এর মধ্যে একদিন স্বাস্থ্য পরিচালক , খুলনা এলেন হাসপাতালে। তিনি আমাকে স্নেহ করতেন। স্যারকে জানালাম সব।

-স্যার ওদের অত্যাচারের মাত্রা বেড়েই চলেছে। আমার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আদি অন্ত সব জানালাম। তিনি আমাকে ধৈর্য ধরতে বললেন এবং তাদেরকেও বলবেন বলে জানালেন।

স্যার চলে যাওয়ার পর এটার কোন কমতি দেখলাম না। এই অবস্থায় একদিন ঢাকা গেলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে দেখা করতে। বেশ কিছুদিন আগে খবর পেয়েছি তিনি তার সাথে দেখা করতে বলেছেন। ঢাকাতে একটি ইনষ্টিটিউটে একজন প্রভাষক পদের জন্য তিনি সংবাদ পাঠিয়েছেন দেখা করার জন্য। একদিন সকালে অধিদপ্তরে তার অফিসে এসে মহাপরচালকের সহকারী -সহকারী পরিচালক(সমন্বয়) এর কাছে সব বললাম।

আগেই জেনেছিলাম উক্ত পদে সহকারী পরিচালক (সমন্বয়) তার প্রিয়ভাজন একজনকে পদায়ন করেছেন তাই তিনি আমাকে মহাপরিচালকের সাথে দেখা করতে দিলেন না। তার কথা-স্যারের কাছে কেন এসেছেন? আমিতো সঠিক জানিনা তাই তাকে বলেছিলাম জানিনা। মহা-পরিচালক ছিলেন প্রফেসর নুরুন্নবী, তিনি আমার শিক্ষকও ছিলেন। তিনি রাতেও অফিসে থাকতেন তাই সারাদিন বসে থাকলাম রাতের অপেক্ষায়। স্যারের পিয়নকে সন্ধার দিকে বললাম রাতে স্যার যখন বেরুবেন তখন আগে তেকেই সে যেন আমাকে জানিয়ে দেয় যেন আমি পথেই স্যারের সাথে কথা বলতে পারি।

কাজ হলো রাত ৮টায় স্যার রুম থেকে বের হন আমি সিড়ির মুখে দাঁড়িয়ে আছি। তিনি আসার সাথে সাথে সালাম দিলাম। পেছনে সহকারী পরিচালক (সমন্বয়)।

-তুমি কে হে?

-স্যার আমি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আরএমও আপনার সাথে দেখা করতে এসেছি। প্রফেসর রহমত (প্রকৃত নাম নয়) আপনার সাথে দেখা করতে বলেছেন।

-ও সেতো পোষ্টিং দেয়া হয়ে গেছে।

কথা ঘুরিয়ে স্যার আবার জিজ্ঞাসা করলেন

-কেন কেন?

-ঐ যে আপনি বললেন পদায়ন করা হয়ে গেছে, ঐ পদের জন্যইতো দেখা করতে বলেছিলেন। স্যারকে চিন্তিত মনে হলো। পেছনে থাকা সহকারী পরিচালককে বললেন।

-পরিকল্পণা কমিশনের স্বাস্থ্য উইং এ একজন ডাক্তার চেয়েছে সেখানে তাকে দিয়ে দাও তবে শর্ত এই যে সেখানে কোন ডাক্তারী করতে পারবেনা বা সুযোগ নেই। টেকনিক্যাল এক্সপার্ট হিসাবে তাদের সাথে প্রেশনে কাজ করবে। আমি রাজি হলাম। পর দিন নাম ঠিকানা রেখে কর্মস্থলে ফিরে এলাম।

আগের সেই ব্যস্ততা, অযথা মিটিং। কোন কিছুতে কোন আশা নেই ভরসা নেই। চোখ কান বুজে কাজ করে যাচ্ছি। একদিন দুপুরে হঠাৎ ফোন পেলাম, অধিদপ্তর থেকে সহকারী পরিচালক বলছেন

-কুষ্টিয়া হাসপাতালে আপনার স্ত্রীও চাকরী করেন?

-জি স্যার।

-আপনি শুধু আপনার একার কথা বলেছেন কেন?

কি উত্তর দেব? একজনেরইতো ঢাকায় পোষ্টিং হয়না সেখানে দুজন কিভাবে সম্ভব? তাকে বললাম।

-আমি যেতে পারলে পরে তাকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করবো।

অবাক করে দিয়ে সহাকরী পরিচালক (সমন্বয়) বললেন

-আমরা দুজনকেই একসাথে নিয়ে আসবো।

প্রায় এক মাস কেটে গেল আমি আগেই খবর পেয়েছি আমারই এক সহকর্মী ঢাকাতে আমাদের দুজনের বদলীর আদেশ দেখেছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমন আদেশ যারা ষ্টেনসিল করে তারাই নিজেদের জিম্মায় রেখে দেয় না পাঠিয়ে উদ্দেশ্য যার প্রয়োজন সে এসে নিয়ে যাবে বকশীশ দিয়ে। আমার ঢাকা যাওয়ার সময় কই?

অবশেষে একদিন আদেশ এলো অনেক দিন পর যোগদানের জন্য ট্রানজিট সময়টাও পার হয়ে গেছে।

এই অবস্থায় জীবন বাজী রেখে ঐ দিনই ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকার পথে রওনা দিলাম। পরম করুণাময়ের ইচ্ছায় পরবর্তীতে সবই সঠিকভাবে চলেছে।

- Advertisement -

Read More

Recent