রবিবার - মে ১৯ - ২০২৪

কানাডা ও মানবাধিকার

বিশ্বের বুকে কানাডা অন্যতম মানবাধিকারের দেশ হিসাবে স্থান করে নিয়েছে কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই মানবাধিকারের বিষয়টি এখানে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেছবি ক্রিস দিনিতো

কানাডা মাবাধিকারের প্রশ্নে আপোষহীন একটি দেশ হিসেবে পরিচিত। বিশ্বের বুকে কানাডা অন্যতম মানবাধিকারের দেশ হিসাবে স্থান করে নিয়েছে।
কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই মানবাধিকারের বিষয়টি এখানে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
কারন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী,দুর্নীতিবাজ,এমনকি খুনীও এই দেশের মানবাধিকারের উছিলায় দেশটিতে আশ্রয় পেয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের অপরাধী,দুর্নীতিবাজ,খুনি, সন্ত্রাসীরা এই দেশে এইভাবে আশ্রয় পেতে থাকলে দেশটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে নিঃসন্দেহে।
অনেকেই বলা শুরু করেছেন, কানাডা অপরাধী,দুর্নীতিবাজদের জন্য অভয়ারণ্য। এমন একটি অপবাদ কানাডার মত একটি সুসভ্য, উন্নত দেশকে নিতে হচ্ছে বলে বিষয়টি অত্যন্ত দুঃভাগ্যজনক।
এমনটি হবার পেছনে আমি মনে করি দেশটির ইমিগ্রেশন সিস্টেম দায়ী। কারন, এই দেশটিতে অভিবাসী হিসাবে আসার ক্ষেত্রে কিছু ফর্ম পূরণ করা এবং নিজ দেশের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিতে হয়। একজন অপরাধী, দুর্নীতিবাজের জন্য নিজ দেশ থেকে এমন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জোগাড় করা কোন সমস্যা না। আর অভিবাসী ফর্মে “YES” ”NO” ধরনের কিছু প্রশ্ন থাকে। যেমন, “তোমার বিরুদ্ধে কি কোন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে?” একজন অপরাধী যে কানাডা আসতে চায় সে স্বাভাবিকভাবেই NO উত্তরটিতে চেক মার্ক দিবে। এই রকম আরো বেশ কয়েকটি প্রশ্ন আছে যেগুলি একজন আবেদনকারীর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এই ফর্ম পূরনের সময় একজন অপরাধী বা খুনি সবগুলির উত্তর NO চেক মার্ক দিয়ে দিলে এবং এর সংগে একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দিতে পারলে তার জন্য কানাডায় অভিবাসী হওয়া কোন সমস্যা না।
এই সিস্টেমের দ্বারা আসলে একজন ব্যক্তি যিনি কানাডায় আসার জন্য আবেদন করেছেন,তার ব্যাকগ্রাউন্ড জানা কোন মতেই সম্ভব নয়।
কানাডার এই সিস্টেমের দুর্বলতার ফাকফোকর গলে বিভিন্ন দেশের খুনি, অপরাধী, সন্ত্রাসীরা এই দেশটিতে জায়গা করে নিচ্ছে।
নিজ দেশে যে ব্যক্তি অপরাধী, সেই একই ব্যক্তি কানাডাতে মুক্ত মানুষ। এক ব্যক্তির এমন দ্বৈত অবস্থান মেনে নেওয়া যায় না।
বেশ কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের একজন এমপির আচার-আচরন এবং কথাবার্তা নিয়ে হৈচৈ হচ্ছিল। তার কয়েকটি ফোনালাপ প্রকাশ হওয়ায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সেই অনুযায়ী তিনি পদত্যাগও করেছেন। এখন শোনা যাচ্ছে তিনি কানাডার, টরন্টোতে আসার জন্য টিকেট কেটেছেন। এই এমপির বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে আইনি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। হবে কিনা সেটিরও কোন লক্ষন দেখি না। তবে ফোনালাপগুলি থেকে ধারনা করা সম্ভব তিনি একই সাথে অনেকগুলি অপরাধ করেছেন। এমন অবস্থায় তিনি কানাডা পাড়ি দিচ্ছেন। সরকারের তরফ থেকে তাকে বাধা দেওয়ার কোন প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়নি। তাহলে কি সরকারের কাছে তার অপরাধগুলি কোন অপরাধ নয়? তাকে কি জিজ্ঞাসাবাদ করারও প্রয়োজন নেই?
বুঝাই যাচ্ছে,কথিত এমপি কানাডার বিষয়ে আগেই ওয়াকিবহাল ছিলেন। তিনি জানেন, এই দেশটিতে একবার আসতে পারলে তার টিকিটিও কেউ স্পর্শ করতে পারবে না। কারন, দেশটি মানবাধিকারের ঝান্ডা উড়িয়ে এমন অনেক নজির তৈরী করেছে যা অন্য দেশের অপরাধীদের জন্য প্রেরণাদায়ক।
এই এমপিও এখানে আসবেন এবং বসবাস শুরু করবেন। এক সময় তিনি এই সুসভ্য দেশের নাগরিকও হবেন। ততদিনে তার সব অতীত ঢাকা পড়ে যাবে।

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent