শনিবার - জুলাই ২৭ - ২০২৪

প্রবাসে আমাদের বাঙালিত্ব

প্রবাসে আমাদের বাঙালিত্ব একটু বাড়ে বললে কমই বলা হবে বরং আমরা যে বাঙালি সেই ফুটানি নিয়ে সুযোগ পেলেই হাজির হই জানিয়ে দিতে যে আমরা আছি

প্রবাসে আমাদের বাঙালিত্ব একটু বাড়ে বললে কমই বলা হবে; বরং, আমরা যে বাঙালি সেই ফুটানি নিয়ে সুযোগ পেলেই হাজির হই, জানিয়ে দিতে যে আমরা আছি। এটা যদি অহংকার হয় তো সেই অহংকারে অহংকারি হতে কারও আপত্তি থাকবে না।

রকি পর্বতমালার পূর্বপাশের শহর ক্যালগারিতে বসে পশ্চিমের দিগন্ত সারাক্ষণ হাতছানি দেয় আর বলে—বহুদূর হেঁটে এসে যেখানে মিলেছে তোমার ঠাঁই, হাঁড়কাঁপা শীতে লেপের তলা নয়, যেখানে তুমি ওম খোঁজ যান্ত্রিক উষ্ণতায়, সেখানে কিসের এত অহংকার তোমার বাঙালিত্বের! কিসের জন্য একেবারে বরফজমা শীতে তোমাদের করতে হবে বসন্তবরণ! আমরা বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি, অথবা, প্রকৃতিই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে আমাদের দিকে—পাগল! মনে মনে ভাবে হয়তো।

- Advertisement -

কে তারে পাত্তা দেয়? এখানে এই শহরে আমরা তেমন কিছু আজব মানুষের সাথে বসবাস করি। বলছি, গানপাগল কিছু বাঙালির কথা; এরা আমাদের চারপাশে খুব ঘন হয়ে বসে, কথা বলে যেন কতদিনের চেনা আত্মীয় কেউ, তারপর যখন একটু দূরে গিয়ে গলা সাধে, চিন্ময় ভেসে আসে তরঙ্গ স্রোতে, আমাদের আত্মার গভীর থেকে কেউ বলে ওঠে—আমরা বাঙালি! তো বাঙালিত্বের ডাক উপেক্ষা করে এমন ক্ষমতা কারও আছে, না ছিল কোনদিন? বাঙালির মনস্তত্বে বোধহয় বাস করে এক অভিমানী কন্যা, যে কিনা যে কোন অবহেলার ইংগিতকে উপেক্ষা করতে পারে নির্দ্ধিধায়।

আর পারে বলেই, যখন সে জেগে ওঠে, তখন সে তার সমস্ত শক্তি নিয়ে একাই জেগে ওঠে, রবীন্দ্রনাথের মতো তাদের মনও তখন ডেকে ডেকে বলে—যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলরে! ১৭ই ফেব্রুয়ারিতে বকুলতলায় ফাগুনের ডাক অবশ্য একলা চলার না; এই শহরের বাঙালিরা তাদের প্রাণের গান শুনতে আর প্রচন্ড শীতের মধ্যেও আগুন জ্বালাতে হাজির হবে সাইমনভ্যালি চার্চের মিলনায়তনে। গান ছাড়া যে বাঙালি বাঁচতে পারে না।

ক্যালগেরি, আলবার্টা

- Advertisement -

Read More

Recent