শনিবার - জুলাই ২৭ - ২০২৪

এডিনবার্গ থেকে ভেনিস : পর্ব ১১

নেদারল্যান্ড ভ্রমণ শেষে এবার আমাদের আমস্টারডাম ছাড়ার পালা

১৭-১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ : ইটালির ভেনিস ভ্রমণ

নেদারল্যান্ড ভ্রমণ শেষে এবার আমাদের আমস্টারডাম ছাড়ার পালা। তবে ইউরোপের গত ১০দিনের ভ্রমণে যেমন আমরা দু’জন একসাথে এবং একই দিকে গন্তব্য ছিল এবার কিন্ত তা হচ্ছে না। দু’জনের গন্তব্য দুদিকে। সজল ভাই জার্মান আর আমি ইটালি। আমারও জার্মান খুব পছন্দের স্থান এবং আমারও জার্মান যেতে ইচ্ছে করছিল। কিন্ত এখানে আমার ব্যক্তিগত আবেগ আমাকে জার্মান যাওয়া থেকে বিরত রেখে ইটালির দিকে নিয়ে গেল। কারণ, সজল ভাই আরও দুয়েকবার ইটালি গিয়েছেন তাই উনার আর ইটালি যাওয়ার খুব ইচ্ছে নেই।

- Advertisement -

তাছাড়া এই মুহূর্তে জার্মানে সজল ভাইয়ের এক বন্ধু অহ নওরোজ, তিনি অবশ্য আমারও খুব কাছের মানুষ, কাটাবনে তার সাথে অনেক আড্ডা দিয়েছি, তিনি একজন কবি মানুষ, সজল ভাইয়ের সাথে আমাকেও জার্মান যাওয়ার জন্য তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমারও জার্মান যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল, কিন্ত জার্মান হয়ে ইটালি যাব এমন সময় আমাদের হাতে নেই, কারণ ২দিন পরই আমরাদের প্যারিস হয়ে দেশে যাওয়ার ফিরতি ফ্লাইট। তাই আমি আবেগ তারিত হয়ে জার্মান ভ্রমণ বাদ দিয়ে ইটালি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।

কারণ ইটালিতে আমার বাড়ির বড়-ছোট মিলিয়ে বেশ কয়েকজন ভাই থাকেন, সুতরায় আমি ইউরোপ ভ্রমণে এসেছি আর ওদের সাথে দেখা হয়নি, এটা যেন খাপ ছাড়া কলমের মত। তাছাড়া আমি যখন লন্ডনের ভিসা পাই তখন থেকেই মিল্টনের সাথে যোগাযোগ, তার পরামর্শ করেই আমি সুইডেনের ভিসার জন্য আবেদন করি। পরে যখন সে জানতে পারলো আমার সুইডেনের ভিসা হয়ে গেছে তখন সে সজল ভাইসহ আমাদের দ’জনকেই ইটালি যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলো। শুধু তাই নয়, সে এও বললো যে, আপনাদের থাকা-খাওয়ার ও ঘুরার সব ব্যবস্থা আমি করবো। মাহবুবও যোগাগোগ করেছে, যাতে আমরা ইটালি যাই। তাই আমস্টার্ডাম থেকে আমরা ভাগ হয়ে সজল জার্মান আর আমি ইটালি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।

আমস্টার্ডামের হোটেল ‘Hotel Mijdrecht Marickenland’ থেকে বের হওয়ার সময় নির্ধারণে আমাদেরকে কিঞ্চিত বেগ পেতে হলো। সজল ভাইয়ের বার্লিন ফ্লাইট সকাল সাড়ে দশটায় আর আমার ইটালির ভেনিস ফ্লাইট দুপুর দুইটায়। সজল ভাইকে বের হতে হবে সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে আর আমাকে সাড়ে দশটায় বের হলেই চলবে। আমাকে শুধু শুধু হোটেলে বসে থাকতে হবে, সাথে অতিরিক্ত ১০০ ইউরো উবার ভাড়া যা বাংলা টাকায় ১২,৫০০/- টাকা। তাই আমরা সকালে একসাথেই বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা যখন সকালে হোটেল ত্যাগ করি তখন হোটেল রিসিপশনে কেউ নেই, নিজে নিজেই টেবিলে চাবি রেখে আমরা উবার নিয়ে এয়ারপোর্টে চলে এলাম। যেহেতু এয়ারপোর্ট হোটেল থেকে অনেক দূর তাই ফিরতি পথেও আমরা আমস্টার্ডামের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দেখতে আসলাম।

এয়ারপোর্টে লাগেজ বুকিং এবং বর্ডিংপাস যেহেতু নিজ উদ্যোগে করতে হয়, এতদিন ইউরোপের অন্যান্য এয়ারপোর্টগুলোতে লাগেজ বুকিং ও বর্ডিংপাস-এর জন্য আমাকে কোনো চিন্তা করতে হয়নি, সজল ভাইয়ের যেহেতু পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল তিনিই সব করেছেন। এবার কিন্তু আমাকেই সব করতে হবে, কারণ ফ্লাইট শুরুর ২ঘণ্টা আগে লাগেজ বুকিং দিতে হয়, তাই সজল ভাই আমাকে শিখিয়ে দিলেন, আর আমি সময় সেভাবে লাগেজ বুকিং করি। তারপর সজল ভাই বিদায় নিলে আমি এয়ারপোর্টে ঘুরে-ফিরে কফি পান করে সময় কাটাই, যখন কফি কিনতে যাই সেখানেও বিপত্তি, কফিশপ নগদ ইউরো নিবেন, আমার ক্রেডিট কার্ডও কাজ করছে না। তাহলে কি আমার কফি পান হবে না! আমি অন্য আরেকটি কফিশপে গিয়ে দেখি ওখানে আমার কার্ড এক্সেপ্ট হয়েছে।

ঠিক ১২টা বাজে আমি যখন লাগেজ বুকিং-এর জন্য লাইন দিলাম তখন সামনে থেকে এনাউন্স আসলো যে `easyjet airlines’-এর দুপুর ২টার ফ্লাইট বাতিল। এ কথা শুনে তো মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, এখানে আমার কাছে কোনো বিকল্প নেই। সজল ভাই চলে গেছেন, আমস্টার্ডাম আরও একদিন থাকবো যে তার কোনো উপায়ও নেই, কারণ ইটালি হয়ে মাঝখানে একদিন পরে প্যারিস থেকে আমাদের দেশে ফিরতি ফ্লাইট। দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে সামনে লাইনের সামনের দিকে এগুতো থাকলাম। সামনে লাইন থেকে অনেকেই চলে যাচ্ছেন। আমি কোথায় যাব বুঝতে পারছি না, তবুও সামনে যেতে লাগলাম। এমন সময় একজন ডাচ রমনি অফিসার আমাকে জিজ্ঞাসা করলো তোমার ফ্লাইট নাম্বার কত? আমি বললে তিনি বললেন ইউ আর লাকি। অর্থাৎ একই সময়ের অন্য নম্বরের ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। যাক, হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।

এদিকে আমি এয়ারপোর্টে থাকতেই মিল্টনকে ফোন করেছিলাম, তখন সে জানালো- “আমি আর মাহবুব এখনই এয়ারপোর্টের দিকে রওয়ানা হচ্ছি, আমরা সময়মত এরাইভেল গেটের বাইরে থাকবো, আপনি কেনো চিন্তা করবেন না।” `easyjet airlines’ এয়ারলাইন্সে আমি যখন ভেনিস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলাম, তখন বেলা চারটার কিছু কম সময়, কিন্তু রানওয়েতে বিমান গেইট না পাওয়ায় বিমান থেকে নামতে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় বেশি লাগলো। যাক, বিমান থেকে নেমে দ্রুত লাগেজ পেয়ে গেলাম, আর ভাবলাম ইউরোপ ভ্রমণে এতদিন তো আমরা দুজন ছিলাম, এবারই একা একা বের হচ্ছি, এরকম ভাবতে ভাবতে যখন গেটের বাইরে পা রাখলাম ঠিক তখন একেবারে চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে মিল্টন ও মাহবুব। তাদেরকে দেখে আমার মনে অন্যরকম এক অনুভূতি জাগ্রত হলো। কারণ, ইউরোপের আটটি এয়ারপোর্টে কখনও এরকম কাউকে পাইনি, পাওয়ার কোনো সুযোগও থাকার কথা না। এখানে এসে একেবারে নিজের বাড়ির লোকদের পেয়ে গেলাম। যদিও বিষয়টি এমন নয় যে, উদেরকে আমি অনেক বছর ধরে দেখি না, বছরখানেক আগেই ওরা বাড়িতে এসেছিল, দেখা হয়েছে। কিন্ত খোধ ইউরোপের তথা ইটালির মাটিতে এভাবে দেখা হবে, এটা একটা অন্যরকম অনুভূতি। এখান থেকে কিভাবে কোথায় যাব তা নিয়ে আমার চিন্তা নেই। মিল্টন বরাবরই মেধাবি ছিল, কোন কাজ কিভাবে করলে সহজ হবে, সেটা সে ভালই বোঝে। তাই তার সাজানো সিডিউল আনুযায়ী আমরা এখান থেকে বের হলাম।

ভেনিস একটি পুরাতন নগরী। ছোট বড় ১১৮টি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এই ভেনিস শহর। এই নগরীর জনসংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ ১৫ হাজার। বিশ্বের সুন্দরতম শহরের একটি এই ভেনিস। বিমানবন্দর থেকে প্রথমেই আমরা বাসে করে সান্তালুছিয়া যাই। এই সান্তালুছিয়া গেলেই বুঝা যাবে যে, পৃথিবীর ভাসমান নগরী বলতে যে ইটালির ভেনিসকে বলা হয়, এখান থেকেই সেটার শুরু। তাবৎ দুনিয়ার পর‌্যটকগণ ইটালির ভেনিস দেখার জন্যে সবাই এখানেই আসেন। সান্তালুছিয়া একটি বড় রেলওয়ে জংশনও বটে। আমার লাগেজগুলো রেলস্টেশনের লকারে রেখে আমরা বেড়িয়ে পরলাম ভাসমান নগরী ভেনিস দেখার জন্য। মিল্টন তিনজনের তিনটি টিকেট কাটল। আমরা উঠে পরলাম ওয়াটার বাসে। ভূমধ্যসাগর থেকে আসা এই জলধারাটি প্রস্থে খুব বেশি নয়।

আমরা বাসে উঠার পর বাস ছেড়ে দিল, খুবই স্বচ্ছ পানি কিন্তু হালকা ডেউ আছে, ধার দিয়ে সারি সারি দালান, দালানগুলোর চেহেরা এমন যে, দেখলেই বুঝা যায় কত বছরের ঐতিহ্য এই দালানগুলো বহন করছে! আমাদের ঢাকা শহরের যেমন ৪০/৫০ ফুট রাস্তার দুদিকে বাই লেন ঢুকে গেছে আর এই বাই লেনগুলোর দুপাশ দিয়ে সারি সারি ভবন, ঠিক তেমনই ভেনিসের জলধারের দুদিক দিয়ে বাইলেনের মতে গলিপথ ঢুকে গেছে, কিন্তু এই গলিপথগুলো পানিতে ভরপুর। প্রত্যেকটি ভবনের নিচে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা থাকে যা ভবনের বাসিন্দাগণ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করেন। এখানে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই ডিঙ্গি। জলাধারে ওয়াটার বাস ছাড়াও আছে আরও একধরনের নৌকা, যেগুলো দেখতে আমাদের চট্টগ্রামের সাম্পান নৌকার মত, তবে আকারে আরও লম্বা আর সামনের দিক এত উঁচু থাকে না। এগুলোর ভাড়া অনেক বেশি, মাঝি ছাড়া আর মাত্র ৪/৫জন বসতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দুইজনও বসে। এ নৌকার স্থানীয় নাম গঞ্জলা। মাঝখানে রাজা-বাদশাহদের গদির মত এক ধরনের গদি থাকে। এসব নৌকা সাধারণত দম্পতিগণ ব্যবহার করেন। বিশেষ করে যারা হানিমুনের জন্য ভেনিসকে বেছে নেয়, তাদের বেশিরভাগই উচ্চ মূল্যে এ বাহন ব্যবহার করেন।

আমাদের ওয়াটার বাস এগিয়ে চলছে, আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে সবকিছু দেখছি আর সৌন্দর‌্য উপভোগ করছি, মিল্টন মাঝে মাঝে আমাকে কিছু কিছু বিষয়ে ব্রিফ করছে। দুদিক দিয়ে যে গলিপথগুলো আছে , এগুলো ভিতরে কতদূর তা আমার বোধগম্য না হলেও গলির থৈ থৈ পানির ওপর দিয়ে যে ছোট ছোট নৌকাগুলো নিয়ে অধিবাসীরা চলাচল করছেন তা দেখলে পরিস্কার বুঝা যায় কেন এই শহরকে ভাসমান নগরী বলা হয়। প্রতিটা ভবনের দিকে তাকালে আপনার কাছে মনে হবে যেন ভবনটি পানির উপরে ভেসে আছে। ওয়াটার বাস দিয়ে আমরা অনেকদূর যেয়ে একটা পর্যায়ে তীরে নেমে পরলাম। ফিরে আসলাম স্থলভাগ দিয়ে এমনভাবে যে, যেদিক পানি নাই, থাকলেও হাতির পিঠের মত ছোট ছোট ব্রিজ আছে, সেসব ব্রিজ দিয়ে পার হতে হতে আসলাম। আসার পথে প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে এমন অনেক স্থাপত্য দেখতে পেলাম, যা আর আমার পক্ষে ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়। হাঁটতে হাঁটতে আবার চলে আসলাম সান্তালুসিয়ার সেই রেলস্টেশনে। মিল্টন-মাহবুব আবার আমাদের কফির পানের ব্যবস্থা করলো, এখানে কফিকে কাফি বলে, কাপে এর পরিমাণ থাকে খুবই অল্প্, চা-চামচে তিন চামচ পরিমাণ হবে। কিন্তু এই তিন চামচ পরিমাণ কাফির স্বাধ জিহ্বায় যতক্ষণ লেগে থাকলো তাতে আর আমার কফি বা চা পানের কোনো ইচ্ছে বা প্রয়োজন হলো না।

যাক, লকার থেকে আমার লাগেজগুলো নিয়ে আমরা ট্রেনে উঠলাম, আমি কখনও দোতলা ট্রেনে উঠি নাই, যদিও আমস্টার্ডামে দোতলা ট্রেনের সাথে আমার দেখা হয়েছিল। এবার মিল্টন মাহাবুব আমার জন্য দোতলা ট্রেনে চড়ার ব্যবস্থা করলো। আমাদের গন্তব্য মিল্টনদের আবাসস্থল বিবিওন হলেও মাঝখানে আমাদেরকে লাতিসানা নামতে হবে, লাতিছানায় আমাদের ট্রেনের গতিপথ শেষ হল। আর কয়েক কি.মি. দূরেই ওদের আবাস ও কর্মস্থল বিবিওন। সময় ততক্ষণে রাত নয়টার বেশি, ট্রেন থেকে নেমেই দেখি আমার আরেক ছোট ভাই লিংকন তার ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার সাথে দেখা হয়ে আরও ভালো লাগলো। তার গাড়ি করে আমরা বিবিওনস্থ তাদের বাসায় পৌঁছলাম। রাতে আবার দেশি খাবার, তাদের রান্না করা দেশি ভাত-মাছ খেয়ে রাতে ঘুমুতে গেলাম।

পরের দিন আর বেশি দূর কোথাও ঘুরতে যাই নাই। তাদের বাসার একেবারে সাথে বিবিওন সি-বিচ। এই সি-বিচে সারা দুনিয়ার মানুষ যারা ইটালি ঘুরতে আসেন তারা অন্তত একবার আসেন। বিশেষ করে ভেনিস আসলে তো কথাই নেই। এখানে লিংকনের তিনটি তিনটি দোকান আছে, তার দোকানে বেশ কয়েকজন কর্মজীবী মানুষ কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। আমি খুবই অবাক হই এই ভেবে যে, লিংকন আমাদের অনেক ছোট, অথচ তার কাজের পরিধি যথেষ্ঠ বড়। তার দোকানে সিজনাল কাজ করে এমন একজনের সাথে আমার কথা হয়, যার বাড়ি ঢাকার ডেমরায়, সে বছরে ৬মাস লিংকনের দোকানে কাজ করে , মাসে বেতন প্রায় ২ হাজার ইউরো, সাথে ফ্রি থাকা-খাওয়া বাবদ লিংকনের খরচ হয় আরও ৭০০ ইউরো। অন্যান্যদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম লিংকন অনেক পরিশ্রম করতে পারে।

সকালে সি-বিচসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখলাম, এতেই দুপুর হয়ে যায়। দুপুরে আমার জন্য তারা আয়োজন করেছে মধ্যাহ্নভোজের। বাহারী যত খাবার, মিল্টন কায়দা করে তার সাথে আমাকে বসায় এবং আমি কোন কোন খাবার পছন্দ করি সেটা সে বুঝে আমাকে পরিবেশন করে। যখন আমরা খাবার খাচ্ছিলাম তখন আমার সাথে দেখা করতে আসলেন আমাদের বাড়ির আরেকজন, যার নাম মোফাজ্জল হোসেন, সে এই রেস্টুরেন্টেই কাজ করে, আজ তার ছুটি। খাওয়া দাওয়া শেষে পাশে একটি সি-বিচ ঘুরে আমরা লিংকনের দোকানে চলে আসি, দোকানে বসে নানা ধরনের লোকদের পণ্য ক্রয়ের সিস্টেম দেখে কাটিয়ে দিলাম বেশ সময়। এভাবে সময় গড়িয়ে রাত হয়ে গেল, হঠাৎ জানলাম আমাদের আরেক বড়ভাই বাচ্চু ভাই আসবেন আমার সাথে দেখা করতে। তিনি আসলেন রাত দশটায়, সাথে ভাবিও আসলেন, ভাবি শুধু আসলেনই না, তিনি আমার স্ত্রী ও মেয়ের জন্য নানা উপহার নিয়ে আসলেন। বাচ্চু ভাই তো আবেগে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন, আমরা বেশ কতক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাচ্চু ভাই ভাবিসহ চলে গেলেন তাদের বাসায় যা এখান থেকে ৩০/৩৫কি.মি. দূরে। আমরা দোকান বন্ধ করে বাসায় চলে যাই।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমার এয়ারপোর্টে যাত্রা । আমার যাত্রাপথ ফ্রান্সের প্যারিস। সিদ্ধান্ত হরো লিংকন আমাকে এয়ারপোর্ট দিয়ে আসবে। তাই সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা চললাম ভেনিস মারকোপলো (Venice Marco Pollo) এয়ারপোর্টের দিকে। লিংকন নিজে ড্রাইভ করছে, দারুণ গাড়ি চালায় সে, তার জন্য শুভ কামনা রইলো। সে এয়ারপোর্টে নামিয়ে আবারও নাস্তা, কফি পান করিয়ে আমাকে একেবারে ডিপার্টচার-এ প্রবেশ দিল। যতক্ষণ আমাকে দেখা গেচে ততক্ষণ পর‌্যন্ত সে দাঁড়িয়ে রইলো। সবার জন্য আমার শুভ কামনা, ভালো থাকিস তুরা সবাই।

- Advertisement -

Read More

Recent