রবিবার - মে ১৯ - ২০২৪

কিছু মানুষ পিছনেই রয়ে গেছে

ছবিসোনিকা আগারওয়াল আনসপ্লাশ

বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির কারনে পৃথিবী অনেক এগিয়েছে কিন্তু কিছু মানুষ পিছনেই রয়ে গেছে। এখনো কিছু মানুষ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লায়। নিচে পত্রিকা থেকে সংগৃহীত কিছু অংশ তুলে ধরা হলো বিষয়টি বুঝার সুবিধার্থেঃ
“জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন খুব ভোরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর আসে যে নানুয়ারদীঘির পূজামণ্ডপের ভেতরে প্রতিমার পায়ের কাছে একটি কোরআন রাখা আছে।
খবর পেয়েই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান।
পুলিশ সেখান থেকে কোরআন নিয়ে আসেন।
কিন্তু দশটা নাগাদ একটি ছবি ব্যাপক ভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়াতে থাকে যেখানে দেখা যায় প্রতিমার হাঁটুর কাছে কোরআন।
অনেকে এটি দিয়ে নানা ধরণের লাইভ বক্তব্য দিয়ে কোরআন অবমাননার অভিযোগ করতে থাকেন।” ইতিমধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাদপুরের হবিগঞ্জে তিনজন নিহত হয়েছে। বিভিন্ন মন্দিরে হামলা করা হয়েছে।
উপরে উল্লেখিত পত্রিকার উদ্বৃতি থেকে যে কোন শিক্ষিত এবং সচেতন ব্যক্তি মাত্রই বুঝতে সক্ষম যে, এমন একটি ঘটনা সাম্প্রদায়িক দাংগা বাধানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে।
এমন ঘটনা বাংলাদেশে বার বার ঘটছে। এর হিসাব মিলানো খুব একটা কঠিন নয়। বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনার বেনিফিসিয়ারী কারা হবে এবং কারাই বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সেটি ভাবলে যে কেউ এই ষড়যন্ত্রের গভীরে যেতে পারবে।
বাংলাদেশ এক সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির দেশ ছিল। হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবাই কাধে কাধ মিলিয়ে দেশটি স্বাধীন করেছিল। দেশটিকে এক সময় ভাবা হতো হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সব ধর্মালম্বীদের দেশ। সেখানে কোন সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘুর ব্যাপার ছিল না। স্বাধীন হবার পর বেশ কয়েক বছর হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে সম্প্রতি বজায় ছিল। কিন্তু এই সম্প্রতি বেশি দিন স্থায়ী হতে পারেনি। এর মূল কারন ধর্মকে রাজনীতির মধ্যে নিয়ে আসা। ভোটের রাজনীতিতে ধর্ম একটি বিরাট এবং উপযোগী হাতিয়ার হিসাবে সব রাজনৈতিক দলের কাছে সমাদৃত হয়েছে।
তবে এই হারিয়ারের সব চেয়ে বড় শিকার হয়েছে সংখ্যালঘুরাই।
এই বারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। আইন শৃংখলা বাহিনী বিষয়টি উদঘাটনের আগেই বিভিন্ন মন্দিরে হামলা করা হয়েছে,প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। উদ্দেশ্য, পুরো দেশে এই উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা।
একটা বিষয় আমরা সবাই বুঝতে অক্ষম,কোন ধর্মের অনুসারীরা একটা দেশে সংখ্যাগুরু হলেও অন্য একটি দেশে তারা সংখ্যালঘু হতে পারে। তাই সংখ্যাগুরু হবার কারনে আজ আমরা যেখানে দাপট দেখাচ্ছি, অন্য ধর্মের অনুসারীদের আক্রমণ করছি, সেই একই পরিনতি আমাদেরকেও অন্য একটি দেশে বরন করতে হতে পারে।
সংখ্যাগুরু হবার কারনে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ কোন বিরত্ব বহন করে না, এটি কাপুরুষোচিত কাজ।
শুরুতেই উল্লেখ করেছি, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির কারনে পৃথিবী অনেক এগিয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর কিছু মানুষ এখনো অন্ধকারেই রয়ে গেছে।
সরকার থেকে যুগান্তকারী কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ভবিষ্যতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent