কাল চক্রের আবর্তনে আবার এসেছে বৈশাখ।
শৈশবে একটা সময় ছিল যখন অধীর আগ্রহে বসে থাকতাম বৈশাখের সাত তারিখ কখন আসবে তার অপেক্ষায়। কখন বসবে ময়নামতির মেলা। টাকা জমিয়ে রাখতাম হাতির দাঁতের ডাটওয়ালা ছুরি কিনব বলে। এখনকার কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট, যাকে আগে বলত ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট। এর গা ঘেঁসেই লাল মাটির পাহাড় এবং টিলায় বসত বিশাল বৈশাখী মেলা। দূর দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষের ভীড় লেগে থাকত সেই মেলায়।
আমাদের গ্রামের বাড়ী মেলার স্থান থেকে মাত্র চার/ পাঁচ কিলোমিটার দূরে। বাড়ীর লোকজন পাহাড়ের ডালে কোন এক ছায়াতলে জড়ো হতো। এরপর যে যার মত মেলায় ঘুরতে গেলেও সবাই ঘুরে ফিরে আবার আসত একই ঠিকানায়।
আমাদের মেলায় সচরাচর নিয়ে ঘুরাত আমার চাচারা। জায়গায় জায়গায় বিক্রি হতো তরমুজ, বাঙ্গী, শশা / খিরা কিংবা রঙ্গীন পানীয় – তোকমা সরবত। তাছাড়া পাহাড়ের আকে বাঁকে খাজা, গজা এসবের পসরাতো আছেই।
জানিনা আজও ময়নামতির মেলা আগের মতই জমজামাট হয় কিনা।
সবই হারানো অতীত।
:::::
রঙের দিন – রঙ্গীন দিন
আজ বুধবার – ৪ঠা বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
গত রবিবার ছিল পহেলা বৈশাখ। সন্ধ্যা বেলায় আমাদের সাথে দেখা করতে এসেছিল আমার এক নিকটতম বন্ধু দম্পতি। অসম্ভব সুন্দর বৈশাখী সাজ। সাথে অড্ডা ঘরের পান্তা – ইলিশ এবং রকমারি ভর্তা। ইউ.এস ট্যাক্স এর শেষ দিন ছিল বিধায় ব্যস্ততার কারনে আমার বের হোয়া হয়নি কোথাও। কিন্তু ভাল সময় কেটেছে উঁনারা আসায়।
ধন্যবাদ মিল্টন ভাই এবং ভাবী।
এখনই সময়
যদিও বাংলাদেশে বৈশাখ আমাদের বসন্ত। মাত্র গাছে পাতা গজাতে শুরু করেছে। পিয়ার গাছে অনেক ফুল ফুটেছে। ভোরে পেটিওতে দাঁড়িয়ে তাকালে মনে হয় রূপসী এক সাদা পরী। আমার খুব ভাল লাগে দেখতে। সকালে ফজর নামাজ শেষ হতে দেরি নেই আমি ব্যাক ইয়ার্ডে বের হই প্রকৃতি আর বাগান দেখতে। জানিনা কি এক অজানা ভাল লাগা।
গত রবিবার গয়েছিলাম আমাদের বীজ এভিনিউ এর বাড়ীর পেছনের আঙ্গিনায়। রসুন গাছগুলো ভালই বড় হতে শুরু করেছে। তবে অবাক করা ব্যপার হচ্ছে কলরবি আর রাইসরিষা শাঁক। অযত্নে বেড়ে উঠেছে যেখানে সেখানে। তুলে নিয়ে এসে শাঁক ভাজি খেলাম খুব মজা করে।
বাগানী বন্ধুদের বলছি এখনই সময় শীতকালীন সব্জি যেমন – সরিষা, মূলা, কলরবি, ধনিয়া এগুলো লাগানোর। আর ঘরে আগাম বীজ করতে চাইলেও কিছু কিছু বীজ এখন লাগাতে পারেন কিংবা মে মাসের শুরুতেও লাগাতে পারেন।
আমার কিছু কিছু বীজ এখনই মাটিতে উঠতে শুরু করেছে।